পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিসংখ্যান ব্যুরো, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন কৃষি পরিসংখ্যান ব্যুরো ও কৃষি শুমারি কমিশন এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন আদমশুমারি কমিশনকে একীভূত করে ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দিক-নির্দেশনায় প্রতিষ্ঠার প্রায় ৪৫ বছর পর বিবিএস বাংলায় কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করল।
রোববার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিবিএস ভবনে ‘কৃষি শুমারি-২০১৯’ এর প্রাথমিক প্রতিবেদন বাংলা ও ইংরেজি- এই দুই ভাষায় প্রকাশ করে বিবিএস। প্রতিবেদনের একই পৃষ্ঠার একপাশে বাংলা ও অন্যপাশে ইংরেজি রয়েছে। এর আগের ৪৫ বছরের ইতিহাসে বিবিএস কোনো প্রতিবেদন ইংরেজি ছাড়া বাংলায় প্রকাশ করেনি।
তবে প্রতিবেদনের শুরুতে ছাপা পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের বার্তা, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তীর ভূমিকা, বিবিএস মহাসচিব মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের মুখবন্ধ এবং কৃষি (শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) শুমারি-২০১৮ প্রকল্পের পরিচালক জাফর আহাম্মদ খানের স্বীকৃতির বক্তব্য সম্পূর্ণ ইংরেজিতে দেয়া হয়েছে; অর্থাৎ বাংলা করা হয়নি।
প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী বলেন, ‘বিবিএসের কোনো প্রতিবেদন এই প্রথম বাংলায় উপস্থাপন করা হলো। পরিকল্পনামন্ত্রীর নির্দেশনায় এটা করা হলো।’
অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘প্রতিবেদনটা দুই ভাষায় করেছে, বাংলা ও ইংরেজি। ভালো। ইংরেজির গুরুত্ব আছে, স্বীকার করি। কিন্তু বাংলায় প্রতিবেদন না করলে দেশের ৯৫ ভাগ মানুষের মাঝে দেয়াল দিয়ে দিই (বা ৯৫ ভাগ বাংলাদেশি তা বুঝতে পারেন না)। সেই দেয়ালটা আমরা চিরতরে শেষ করতে চাই। কোথাও ইংরেজির অপ্রয়োজনীয় ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।’
উদাহরণ টেনে এম এ মান্নান বলেন, ‘ঘরের কাছে থাইল্যান্ডে যান না, তারা কত উন্নতি করেছে। কিন্তু তাদের মাঝে কোথাও কোনো ইংরেজি দেখেন? একজন লোকও পাইনি যে, ইংরেজি পারে। তাদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে? চীনেদের, জাপানিদের অসুবিধা হচ্ছে? অথচ তারা মহাবিজ্ঞানী, সবদিকেই তারা কাজ করছে।’
বাংলায় প্রতিবেদনটি তৈরি করায় বিবিএসকে ধন্যবাদ জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ধন্যবাদ জানাই যে, আপনি এই কাজটা করতে পেরেছেন। বাংলা ভাষার ব্যবহার আরও বৃদ্ধি করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রইছউল আলম মণ্ডল, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, বিবিএসের মহাসচিব মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, কৃষি শুমারির প্রকল্প পরিচালক জাফর আহাম্মদ খানসহ অনেকে।