৩ সিটিতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ নিশ্চিতে ১৪৫৪ কোটি টাকার প্রকল্প

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এলাকায় ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) গ্রাহকদের মানসম্পন্ন ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। পাশাপাশি অতিরিক্ত ১ লাখ ১৫ হাজার গ্রাহক সংযোগের অবকাঠামো সুবিধা সৃষ্টি করা হবে।

এ লক্ষ্যে মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১ হাজার ৪৫৪ কোটি ৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকার প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। এর মধ্যে সরকার দেবে ৩৬৯ কোটি ২ লাখ ৩৭ হাজার, ডিপিডিসি দেবে ৮২ কোটি ৬০ লাখ ২৮ হাজার টাকা এবং বিদেশি প্রকল্প ঋণ ও অনুদান হিসেবে এএফডি ও ইইউ দেবে ১ হাজার ২ কোটি ৪২ লাখ ১২ হাজার টাকা। চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় উপকেন্দ্র নির্মাণ ও পুনর্বাসন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় ক্যাপাসিটর ব্যাংক স্থাপন এবং স্মার্ট গ্রিড ব্যবস্থার প্রবর্তন’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ডিপিডিসি।

এ বিষয়ে একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘দেশের জন্য শতভাগ নিশ্চিত করার প্রায় শেষ পর্যায়ে আছি। এ বছরের মধ্যে শতভাগের মধ্যে শতভাগ অবশ্যই হয়ে যাবে। এখন আমাদের কাজ হবে আপগ্রেডেশন, স্ট্রেথেনিং, রিপ্লেসমেন্ট। অনেক পুরাতন যন্ত্রপাতি বদলাতে হবে। ক্যাপাসিটি আপগ্রেড করতে হবে। ১১ ও ৩৩ কেভি ভোল্টেজের উন্নয়ন করা। নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ দিতে হবে। এর আওতায় আজকে একটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে।’

সম্পূর্ণ নতুন এ প্রকল্পে ফ্রান্সও বিনিয়োগ করছে বলে জানান মন্ত্রী। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জীবন চলমান। নতুন নতুন বাড়িঘর হচ্ছে। অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই, এর মধ্যেও কিছু লোক আছে বিদ্যুৎ নিতে পারে না। তাদের আর্থিক সঙ্গতি নেই। হিসাব করে তাদেরকেও বিদ্যুতের আওতায় নিয়ে আসা হবে। ইনক্লুসিভ পাওয়ার সাপ্লাই করা হবে। যে পারছে না তাকে সহায়তা করবো, অথবা তার সক্ষমতা বাড়তে থাকলে সে ব্যবহার করবে। আর সক্ষমতা বৃদ্ধি করবো। অনেকে লো-ভোল্টেজ পায়। আজকাল তো মাইক্রোওভেন অনেকেই চালায়। সেগুলো যেন তারা চালাতে পারে। এটা নিয়ে কাজ চলছে।’

প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ডিপিডিসি বলছে, তাদের এলাকায় গ্রাহকদের কাছে মানসম্পন্ন ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা এবং ১৩২ কেভি, ৩৩ কেভি ও ১১ কেভি ভোল্টেজ লেভেলে পাওয়ার ফ্যাক্টরের উন্নয়ন সাধন করা, সাব-স্টেশনের ক্ষমতা বাড়ানো এবং স্মার্ট গ্রিড ব্যবস্থার প্রবর্তনের মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় বিদ্যুতের নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি করা, বিদ্যুৎ সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে ভারসাম্য অবস্থার উন্নয়নে সহায়তা করা। এছাড়া ২টি নতুন ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড সাব-স্টেশন (২টি ৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশনসহ) এবং চারটি ৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশন নির্মাণ করা হবে। সেই সঙ্গে ১৩২ কেভি লেভেলে ৪৮০ এমভিএ এবং ৩৩ কেভি লেভেলে ৫২৫ এমভিএ বিতরণ ক্ষমতা বৃদ্ধি, তিনটি সাব-স্টেশনের সংস্কার ও ক্ষমতা বৃদ্ধি, পাঁচটি বিদ্যমান সাব-স্টেশনকে এআইএস হতে জিআইএসে রূপান্তর করা, ১৩২ কেভি, ৩৩ কেভি এবং ১১ কেভি ভোল্টেজ লেভেলে পাওয়ার ফ্যাক্টর উন্নীত করা, মানসম্পন্ন ও নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা, স্মার্ট গ্রিড ব্যবস্থার প্রবর্তনের মাধ্যমে ডিপিডিসি এলাকাটিতে পাইলট বেসিসে বিতরণ ব্যবস্থার দক্ষতা বৃদ্ধি করা এবং অতিরিক্ত ১ লাখ ১৫ হাজার গ্রাহক সংযোগের অবকাঠামো সুবিধা সৃষ্টি করা হবে।

প্রকল্পটি ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দবিহীনভাবে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তভুর্ক্ত রয়েছে। প্রধান কার্যক্রমের বিষয়ে প্রকল্প সূত্র জানায়, দুটি নতুন ১৩২/৩৩ কেভি (৩৩/১১ কেভি সাব-স্টেশনসহ) এবং চারটি ৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশন স্থাপন করা। তিনটি বিদ্যমান সাব-স্টেশনের রেনোভেশন ও অগমেন্টেশন এবং পাঁচটি ৩৩ কেভি এআইএস সাব-স্টেশনকে ৩৩ কেভি জিআইএস সাব-স্টেশনে প্রতিস্থাপন করা। ডিপিডিসি এলাকায় পাইলট ভিত্তিতে স্মার্ট গ্রিড ব্যবস্থার প্রবর্তন করা। পরামর্শ সেবা কেনা, ১১টি যানবাহন কেনা ও ১৫টি সাব-স্টেশন ভবন নির্মাণ করা হবে।