৩৬তম বিসিএসে উত্তীর্ণ ননক্যাডার চাকরিপ্রার্থীদের শতভাগ নিয়োগ নিশ্চিতের পর ৩৭তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের দাবি জানিয়েছে চাকরিতে সুপারিশবঞ্চিতরা। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। ১০ মের মধ্যে দাবি না মানলে তারা মানববন্ধন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি দেওয়া ও আমরণ অনশন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ৩৬তম বিসিএস ননক্যাডার সুপারিশবঞ্চিত প্রার্থীদের সংগঠনের আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক জাকিরুল ইসলাম, তাপসী রাবেয়া, ফেরদৌসৗ আক্তার, মোজাম্মেল হোসেনসহ শতাধিক সুপারিশবঞ্চিত।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জহিরুল ইসলাম বলেন, ৩৬তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলে পাঁচ হাজার ৬৩৩ জন উত্তীর্ণ হন। এর মধ্যে দুই হাজার ৩২৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে এবং পদস্বল্পতার কারণে তিন হাজার ৩০৮ জনকে ননক্যাডার তালিকায় রাখা হয়। এর মধ্যে দুই হাজার ৭০০ প্রার্থী ননক্যাডারে চাকরির জন্য পিএসসিতে আবেদন করেন। ১৫ মার্চ ২৮৪টি পদে, ২২ মার্চ ৯৮৫টি পদে মোট এক হাজার ২৬৯ জনকে সুপারিশ করে সুপারিশ সম্পন্ন হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়। অর্থাৎ এক হাজার ৪৩১ প্রার্থীকে সুপারিশবঞ্চিত করা হয়েছে।
সুপারিশবঞ্চিত ননক্যাডাররা জানান, আবেদন করা দুই হাজার ৭০০ প্রার্থীকে চাকরিতে সুপারিশ করার জন্য পিএসসি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরে শূন্য পদের চাহিদা চায়। কিন্তু অনেক মন্ত্রণালয় শূন্য পদ থাকা সত্ত্বেও চাহিদাপত্র পিএসসিতে পাঠায়নি, আবার অনেকে বিলম্ব করেছে। যা ৩৬তম বিসিএসে বরাদ্দকৃত হলেও সেগুলোতে সুপারিশ করা হয়নি। যেমন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রথম শ্রেণির ১৭টি ও দ্বিতীয় শ্রেণির ১৩৫টিসহ ১৫২টি চাহিদাপত্র ৩৬তম ননক্যাডার থেকে পূরণের লক্ষ্যে ২২ মার্চ পিএসসিতে আসে। কিন্তু পিএসসি সেগুলো সুপারিশ করেনি। ওই মন্ত্রণালয় থেকে বিদ্যমান পদগুলো যাতে ৩৬তম বিসিএস
ননক্যাডারদের থেকেই নিয়োগ দেওয়া হয়, এ ব্যাপারে পিএসসিতে যোগাযোগ করা হলেও পিএসসি থেকে আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায়নি।
তারা আরও জানান, অনেক প্রার্থী ননক্যাডারের জন্য ফরম জমা না দিলেও তাদের সুপারিশ করা হয়েছে, যা অনেকের মনে সংশয় সৃষ্টি করেছে। সাধারণত পিএসসির নিয়ম হলো পূর্বের বিসিএসের ননক্যাডারের সুপারিশ অব্যাহত রাখা হয় পরবর্তী বিসিএসের ফল প্রকাশের আগমুহূর্ত পর্যন্ত, যা ৩৪ ও ৩৫তম বিসিএসে দেখা গেছে। কিন্তু ৩৬তম বিসিএসের এক হাজার যোগ্য প্রার্থীকে পদ থাকা সত্ত্বেও চাকরিতে সুপারিশ না করে ৩৭তম বিসিএসের ফল প্রকাশ করতে যাচ্ছে পিএসসি। এতে সুপারিশবঞ্চিত প্রার্থীরা সম্পূর্ণ অমানবিক ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
সুপারিশবঞ্চিত ননক্যাডাররা বলেন, অনেকের চাকরির বয়স শেষ হয়ে গেছে, এটা ছাড়া তাদের আর কোনো সুযোগ নেই। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে জনপ্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির এক লাখ দুই হাজার শূন্য পদ খালি আছে। এ অবস্থায় তারা নিয়োগ না পেলে বঞ্চিত হবেন। এ ছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যমে পিএসসির চেয়ারম্যানের ননক্যাডারদের শতভাগ নিয়োগ দেওয়ার আশ্বাসে তাদের মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যরা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। এখন তাদের সেই স্বপ্ন ধূলিসাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এ সময় তারা সরকারের কাছে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, সরকারি স্কুলের সহকারী শিক্ষক, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ বিভিন্ন সরকারি শূন্য পদে ননক্যাডারদের নিয়োগের সুপারিশের দাবি জানান।