#

পেঁয়াজ নিয়ে মুনাফালোভীদের চলমান দুর্বৃত্তপনা রোধ ও সংকট মোকাবিলায় প্রতিবেশী মিয়ানমার থেকে আমদানি করা হচ্ছে হাজার হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ। গত সেপ্টেম্বর মাসের ৩০ দিনে আমদানি হয়েছে তিন হাজার ৫৭৩ মেট্রিক টন পেঁয়াজ। আর চলতি মাসের তিনদিনে প্রায় আড়াই হাজার মেট্রিকটন পেঁয়াজ মিয়ানমার থেকে আমদানি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ স্থলবন্দর ব্যবসায়ীরা।

স্থলবন্দর শুল্কবিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম দুই দিনে মিয়ানমার থেকে এক হাজার ৮০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। বন্দরে আরও প্রায় ৮০৩ দশমিক ৭৯৮ মেট্রিক টন পেঁয়াজবোঝাই ট্রলার নোঙর করা রয়েছে। এছাড়া ১৪টি পেঁয়াজবোঝাই ট্রলার বন্দরের পথে রওনা দিয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

এদিকে মিয়ানমার থেকে রেকর্ড পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি সত্ত্বেও অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয় বাজারে গত কয়েকদিন আগেও পেঁয়াজের দাম চড়া থাকলেও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের পেঁয়াজ ৫০ টাকা আর ভারতেরটা ৭০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয় এবং একই সঙ্গে বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে পেঁয়াজের অতিরিক্ত মূল্য আদায়কারী ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হচ্ছে। এ অবস্থায় কক্সবাজারের পেঁয়াজের বাজার অনেকটা স্থিতিশীল রয়েছে বলেই জানান সাধারণ ভোক্তারা।

জেলার চকরিয়াতেও পেঁয়াজের বাজার সহনীয় রাখতে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নূরুদ্দীন মুহাম্মদ শিবলী নোমান পৌরসভার চিরিংগা সোসাইটি বাজারে অভিযান চালান। বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রির দায়ে বাজারের চারটি মুদি দোকানকে এক লাখ ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধির কোনো সুযোগ নেই। আমরা কক্সবাজারের বাজারে পেঁয়াজের মূল্য ৫০ ও ৭০ টাকা নির্ধারণ করেছি। পাশাপাশি বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে কোনো ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মূল্য আদায় করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাদের জরিমানা করা হচ্ছে।

টেকনাফ স্থলবন্দরে পেঁয়াজ

আমদানিকারকরা জানান, পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকবে। অনেক ব্যবসায়ী আমদানিকৃত পেঁয়াজ দ্রুত খালাসে বন্দর শ্রমিক অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন। তাদের অভিযোগ, শ্রমিক সংকটের কারণে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজবোঝাই ট্রলারগুলো বন্দরে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত খালাসের ব্যবস্থা নেয়া হয় না।

টেকনাফ স্থলবন্দরে পেঁয়াজ আমদানিকারক এমএ হাসেম বলেন, ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করেছে জানার পরই আমরা দেশে পেঁয়াজের সংকট কাটাতে মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেই। দ্রুত সময়ে আমদানিকৃত পেঁয়াজগুলো খালাস করে তা চট্টগ্রামে সরবরাহ করা হচ্ছে। মিয়ানমারের রফতানিকারকরা চলতি মাসেও প্রচুর পেঁয়াজ পাঠাবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন।

টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা আফসার উদ্দিন জানান, টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি অতীতের যেকোনো রেকর্ড ছাড়িয়েছে। আশা করছি চলতি মাসে আরও রেকর্ড পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হবে। পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে, এটি অব্যাহত থাকবে।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন