২৮ বছর পর মিলল পিতৃপরিচয়

:
: ৫ years ago

জন্মের ২৮ বছর পর পিতৃপরিচয় মিলেছে চটপটি বিক্রেতা মোহাম্মদ ইদ্রিস বিশ্বাসের। গত ২১ জুলাই নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে তাকে সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন ইসলামী ব্যাংক, পটুয়াখালী শাখার কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বিশ্বাস।

জানা গেছে, প্রায় ৩০ বছর আগে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ধুলাসার গ্রামের আবদুস সালাম বিশ্বাসের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম বিশ্বাসের সঙ্গে মির্জাগঞ্জ উপজেলার মির্জাগঞ্জ গ্রামের তোজমান খানের মেয়ে মোসা. সাফিয়া বেগমের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। এরপর স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের গ্রামের বাড়ি তুলে নেন সাইফুল। প্রায় দুই বছর পর ওই দম্পতির ঘরে একটি ছেলেসন্তান জন্ম নেয়, নাম রাখা হয় মোহাম্মদ ইদ্রিস বিশ্বাস।

এদিকে শুরু থেকেই সাইফুল ইসলামের বাবা-মা এ বিয়ে মেনে নিতে পারেননি। ফলে ইদ্রিসের জন্মের মাত্র ১৫ দিনের মাথায় সাফিয়া বেগমের সঙ্গে সাইফুলের বিবাহবিচ্ছেদ (তালাক) ঘটে।

১৫ দিনের সেই ছোট্ট শিশু ইদ্রিস বিশ্বাসের বয়স এখন ২৮ এর কোঠায়। মা, স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস করেন পটুয়াখালী শহরে ভাড়া বাসায়। তবে সবকিছু থাকার পরও পিতৃপরিচয় না থাকা প্রতিনিয়ত কাঁদিয়েছে তাকে। তাই সময় ও সুযোগ পেলেই বাবাকে খুঁজতেন ইদ্রিস। অবশেষে গত ২১ জুলাই বাবা সাইফুল ইসলামকে খুঁজে পান তিনি।

এদিকে দীর্ঘ ২৮ বছর পর বাবাকে পেয়ে ইদ্রিস বিশ্বাস বলেন, বাবার বাড়ি থাকতে না পেরে মির্জাগঞ্জে মায়ের সঙ্গে নানা বাড়িতে চলে আসি এবং সেখানেই বড় হই। অর্থাভাবে নবম শ্রেণির পর আর লেখাপড়া করা সম্ভব হয়নি। এরপর পটুয়াখালী এসে খালাতো ভাইয়ের চটপটির দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করি। পরবর্তীতে নিজেই শহরের শহীদ আলাউদ্দিন শিশুপার্ক চত্বরে চটপটির দোকান দেই। নাম দিয়েছি ‘বিশ্বাস চটপটি হাউজ’।

তিনি আরও বলেন, ‘জন্মের পর থেকে বাবার আদর, স্নেহ ও ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত ছিলাম। জ্ঞান হওয়ার পর থেকে বাবাকে খুঁজেছি, কিন্তু পাইনি। অনেক সাধনা ও কষ্টে ২৮ বছর পর তাকে খুঁজে পাই এবং সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি। এতেই আমি খুশি।

ইদ্রিস বিশ্বাসের মা সাফিয়া বেগম বলেন, ২৮ বছর পর হলেও আমার ছেলে যে পিতৃপরিচয় পেয়েছে তাতেই আমি খুশি।

এ ব্যাপারে ইদ্রিস বিশ্বাসের বাবা মো. শফিকুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, ইদ্রিস আমারই ছেলে।

কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শফিকুল আলম বাবুল খান জানান, গত ২১ জুলাই নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে পিতৃপরিচয় পেয়েছে ইদ্রিস।