২০২৩ সাল থেকে স্কুল-কলেজে সপ্তাহে দুদিন ছুটি

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৩ সাল থেকে দেশের সরকারি-বেসরকারি সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে দুদিন সাপ্তাহিক ছুটি কার্যকর করা হবে।

শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) নতুন কারিকুলাম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ২০২৩ সাল থেকে সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে দুদিন করে। পাশাপাশি নতুন কারিকুলামে যুক্ত হওয়া ৬২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এখন থেকেই সপ্তাহে দুদিন ছুটি পাবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, চলতি বছর থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন কার্যকর করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক পর্যায়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত না হওয়ায় যেটি কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে দুদিন ছুটি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সম্মতি দিয়েছেন। ২০২৩ সাল থেকে এসব স্তরে সাপ্তাহিক দুদিন ছুটি কার্যকর হবে।

ডা. দীপু মনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আজ নতুন কারিকুলামের পাঠ্যবই উদ্বোধন করা হলো। যেহেতু এটি সম্পূর্ণ নতুনভাবে প্রণয়ন করা হয়েছে, সে কারণে নানা ধরনের ভুল-ভ্রান্তি চিহ্নিত হতে পারে।

নতুন কারিকুলামে যে কোনো ধরনের ভুল-ভ্রান্তি তুলে ধরতে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নতুন কারিকুলাম পাইলটিং শুরু হলে প্রতি সপ্তাহে আমরা ফিডব্যাক পাবো। সেসব ফিডব্যাক পেলে বোঝা যাবে আমাদের প্রচেষ্টা কতটুকু সফল হয়েছে। তবে আমরা সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে নতুন কারিকুলাম তৈরিতে কাজ করেছি। যেখানে যে ধরনের কনটেন্ট দরকার সেগুলো যুক্ত করা হয়েছে। আশা করি, শিক্ষার্থীরা এসব বই হাতে পেলে আনন্দ নিয়ে পড়ালেখা করবে।

সরকারি সব অফিস-আদালতে সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন শুক্র ও শনিবার। স্কুল-কলেজে ছুটি শুধু একদিন শুক্রবার। তবে প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন। কোনো কোনো বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও সপ্তাহে দুদিন ছুটি রয়েছে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি বাড়াতে প্রস্তাব করেছিল জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।

এনসিটিবি সূত্রে জানা যায়, বিদ্যমান সাপ্তাহিক ও অন্যান্য ছুটি ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বছরে ক্লাস চলে ২১৫ দিন। শনিবার ছুটি হলে ক্লাস হবে ১৮৫ দিন। কারণ, বছরের বেশকিছু শনিবার সরকারি ছুটি থাকে।

এনসিটিবি বলছে, ২০২০ সালে শিক্ষাক্রম পরিমার্জন প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, ছুটি বাড়লেও শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমের ক্ষতি হবে না। তাদের লার্নিং আওয়ার কমবে না। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখেই ছুটি বাড়ানোর এ প্রস্তাব করা হয়। এতে শিক্ষার্থীদের ওপর শারীরিক ও মানসিক চাপ কমবে।

এদিকে আজ নতুন কারিকুলামের পাইলটিংয়ের জন্য নির্বাচিত ৬২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ শ্রেণির জন্য নির্ধারিত পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেন শিক্ষামন্ত্রী।

নতুন কারিকুলামে ২০২৪ সাল থেকে নবম শ্রেণিতে মানবিক, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান (আর্টস, কমার্স ও সায়েন্স) বিভাগ আর থাকছে না বলেও জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শুধু জ্ঞান নয়, এর সাথে দক্ষতা অর্জনই মূলত নতুন কারিকুলামের লক্ষ্য। সেটি বাস্তবায়নেই আমাদের আগামী দিনের পথচলা।

তিনি বলেন, এখন পাইলটিং চলবে। ৬২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এটি বাস্তবায়িত হবে। এতে সফল হতে পারলে ২০২৩ সাল থেকে প্রাথমিকভাবে ষষ্ট ও সপ্তম শ্রেণি থেকে বাস্তবায়ন করবো। ২০২৪ সালে অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে এটি বাস্তবায়ন হবে। সে হিসেবে ২০২৪ সাল থেকে আর আর্টস, কমার্স, সায়েন্স বিভাগ থাকছে না।