১৯৪৫ সালেই মৃত্যু হয় হিটলারের!

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

জার্মানির স্বৈরশাসক এডলফ হিটলারের মৃত্যু নিয়ে কম গবেষণা হয়নি। নানা তথ্যও বেরিয়ে এসেছে বিভিন্ন সময়। তবে এবার বোধহয় নিশ্চিত করেই নাৎসি শাসকের মৃত্যু রহস্য উদঘাটন করেছেন ফরাসি বিজ্ঞানিরা।তাদের দাবি, ১৯৪৫ সালে বার্লিনে মারা গেছেন হিটলার। এর মধ্য দিয়ে তার মৃত্যু ঘিরে যে বিভ্রান্তি তা খানিকটা হলেও দূর হলে বলে মনে করা হচ্ছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষদিকে নয়; হিটলার পালিয়ে গিয়ে আরো অনেক দিন বেঁচেছিলেন! এমন অনেক তথ্যই বারবার সামনে এসেছে। তবে ফরাসি গবেষক দলের নতুন করে দেওয়া তথ্যে সেগুলো নিয়ে ধোঁয়াশা কেটেছে।

বিবিসি বলছে, ফরাসি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল রাশিয়ায় সংরক্ষিত হিটলারের দাঁত ও মাথার খুলির অংশ পরীক্ষা করে বলেছেন, হিটলার যে বুলেটের আঘাত ও সায়নাইড পান করার ফলে মারা গেছেন, এ ব্যাপারে তারা প্রায় সম্পূর্ণ নিশ্চিত।

সম্প্রতি ইউরোপিয়ান জার্নাল অব ইন্টার্নাল মেডিসিন নামে এক সাময়িকীতে ওই পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে।প্রধান গবেষক ফিলিপ শার্লিয়ে বলেছেন, তাদের এই জরিপের ফলে নাৎসি জার্মানির নেতার ভাগ্যে কি ঘটেছিল তা নিয়ে বহু ষড়যন্ত্র তত্ব ভেস্তে গেছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ লগ্নে ১৯৪৫ সালের ৩০ শে এপ্রিল বার্লিনে মার্টির নিচের বাংকারের ভেতর এডলফ হিটলার এবং তার সদ্যবিবাহিত স্ত্রী ইভা ব্রাউন আত্মহত্যা করেন।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইভা ব্রাউন সায়ানাইড বিষ পান করে, আর হিটলার নিজের মাথায় গুলি করেন এবং সম্ভবত সায়নাইডও গ্রহণ করেছিলেন।

দীর্ঘদিনের সঙ্গিনী ইভা ব্রাউনকে তার আগের দিন বাংকারের মধ্যে বিয়ে করেন হিটলার। তখন রুশ সৈন্যরা বার্লিন শহরের উপকণ্ঠে ঢুকে পড়ে, এবং নাৎসি শাসকদের পতন নিশ্চিত হয়ে গেছে।

হিটলারের মরদেহ জার্মান সৈন্যরাই বাংকার থেকে বের করে রাইখ চান্সেরির বাগানে একটি গর্তে ফেলে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলেন। কিন্তু তার মরদেহের কিছু অংশ রুশরা উদ্ধার করে  মস্কোয় নিয়ে যায়।

ফরাসি বৈজ্ঞানিকরা বলেছেন, ১৯৪৬ সালের পর তারাই প্রথম হিটলারের দেহাবশেষের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন। হিটলারের মাথার খুলির একাংশের বাম দিকে একটি গর্ত দেখা গেছে- যা সম্ভবত বুলেটের আঘাতে সৃষ্ট।

এছাড়া হিটলারের বাঁধানো দাঁতের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে তারা নীলাভ আস্তরণ দেখতে পেয়েছেন- যা সম্ভবত ধাতব দাঁতের সাথে সায়নাইডের বিক্রিয়ার ফলে সৃষ্টি হয়েছে। হিটলারের মৃত্যু নিয়ে  ষড়যন্ত্রের তত্ব আছে।

কেউ বলেন, হিটলার ১৯৪৫ সালে মারা যাননি, তিনি জার্মানির পরাজয়ের পর একটি সাবমেরিনে করে আর্জেন্টিনায় আশ্রয় নেন। আরেক তত্ত্বে বলা হয়, হিটলার এ্যান্টার্কটিকায়এক গোপন ঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

প্রধান গবেষক ফিলিপ শার্লিয়ে এএফপিকে বলেন, তাদের গবেষণার পর এখন সব ষড়যন্ত্র এখানেই সমাপ্তি ঘটানো উচিত।

হিটলারের মৃত্যুর পরদিন পহেলা মে জার্মান রেডিওতে খবরটি ঘোষণা করা হয়। ওইদিন যুক্তরাজ্যর রাজধানী লন্ডন থেকে ৪০ মাইল উত্তরে রেডিং শহরের উপকণ্ঠে বিবিসি মনিটরিং এর দফতরে বসে জার্মান রেডিওর অনুষ্ঠান শুনছিলেন জার্মানি থেকে পালিয়ে আসা কর্মী কার্ল লিমান।

তিনি বলেছিলেন, শ্রোতাদের জানানো হয় একটা গুরুত্বপূর্ণ খবর আসছে। এর পর তারা ভাবগম্ভীর সঙ্গীত বাজানো হল, পরে  ঘোষণা করলো যে ‘বলশেভিজমের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে  হিটলার প্রাণ হারিয়েছেন।এরপর ৭ মে জার্মানি আত্মসমর্পণ করার ফলে, ইউরোপে ৬ বছরের যুদ্ধের অবসান হয়।