দেশের সর্ব বৃহৎ ও প্রাচীন ঈদগাহ কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান ঈদ জামাতের জন্য প্রস্তুত। সকাল ৯টায় জামাত শুরু হবে।
এবার শোলাকিয়ায় ১৯০ তম ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঈদগাহের নিয়মিত ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ হজে যাওয়ায় এবার ইমামতি করবেন শহরের মারকায মসজিদের ইমাম মাওলানা হিফজুর রহমান।
ঈদগাহে চার স্তরের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ঈদগাহ পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় প্রশাসন। ওয়াচ টাওয়ার ও সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে নানাভাবে সাজানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি থাকবে বিজিবি, র্যাব ও এপিবিএন। প্রত্যেক মুসল্লিকে তল্লাশি করে মাঠে প্রবেশ করানো হবে।
গত বছরের জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপট মাথায় রেখেই সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. আজিমুদ্দিন বিশ্বাস।
জেলা পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন খান জানান, জামাত নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে তিন প্লাটুন বিজিবি ও র্যাবের পাশাপাশি মাঠে এপিবিএন, পুলিশসহ সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও দায়িত্ব পালন করবে।
মাঠের প্রতিটি প্রবেশ পথসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় নজরদারী এবং মুসল্লিদের মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশি করা হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে শুধু জায়নামাজ নিয়ে মুসল্লিদের মাঠে ঢুকতে দেওয়া হবে।
ঈদ জামাতে আগত মুসল্লিদের সুবিধার্থে ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। একটি ট্রেন ভোর পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে এবং আরেকটি সকাল ৬টায় ভৈরব থেকে ছেড়ে আসবে।
১৮২৮ সালে শোলাকিয়া ঈদগাহে ঈদের বড় জামাত অনুষ্ঠিত হলেও এর যাত্রা শুরু হয় ১৭৫০ সালে। এ হিসাবে শোলাকিয়া মাঠের আড়াইশ বছরেরও বেশি সময়ের ঐতিহ্য রয়েছে। মসনদ-ই-আলা ঈশাখাঁর ৬ষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত খানের উত্তরসূরী দেওয়ান মান্নান দাদ খান ১৯৫০ সালে ৪.৩৫ একর ভূমি শোলাকিয়া ঈদগাহকে ওয়াকফ করে দেন। দেওয়ান সাহেবের মা মাহমুদা আয়শা খাতুনের অসিয়ত মোতাবেক এ ওয়াকফনামা সম্পাদিত হয়। পরবর্তী সময়ে অন্যান্য সূত্রে প্রাপ্ত জমি মিলে বর্তমানে এ ঈদগাহে জায়গার পরিমাণ দাড়িয়েছে ৭ একর।
গত বছর ঈদুল ফিতরের দিন সকালে শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে পুলিশের চৌকিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। হামলায় পুলিশের দুই সদস্য, এক জঙ্গিসহ চারজন নিহত হয়।