১৫ ফেব্রুয়ারির মতো কোনো নির্বাচন আয়োজন করতে চাই না: শেখ হাসিনা

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজন এবং ভোটারদের আস্থা অর্জনসহ নির্বাচনে অংশগ্রহণে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে দলের কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। শুক্রবার গণভবনে আওয়ামী লীগ পার্লামেন্টারি বোর্ডের এক সভায় ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমরা মাগুরা অথবা ঢাকার উপনির্বাচন অথবা ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির মতো কোনো নির্বাচন আয়োজন করতে চাই না।’ তিন সিটি করপোরেশন, একটি সংসদীয় আসন এবং বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর মনোনয়ন প্রদানে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হোক, তাঁর পক্ষে দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’ মনোনয়ন দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক প্রার্থীই মনোনয়নযোগ্য। তবে, আমাদের এক আসনে একজনকেই মনোনয়ন দিতে হবে। তাই, আমাদের দলের ভাবমূর্তির বিষয়টি মনে রাখতে হবে। ভোটারদের আস্থা অর্জন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

শেখ হাসিনা বলেন, জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। আসন্ন সকল নির্বাচন বিশেষ করে সিটি করপোরেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সরকার বিএনপি’র মতো নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসী নয়। দলের কর্মীদের এ কথা মাথায় রাখতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, সামরিক একনায়কেরা নির্বাচনে কারচুপির মাধ্যমে জনগণের রায়কে ছিনিয়ে নিয়েছে। কিন্তু আমরা জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও ছবিসহ ভোটার তালিকা চালু এবং অন্যান্য সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের উন্নয়নের কথা জনগণের সামনে তুলে ধরতে দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে দেশের নজিরবিহীন উন্নতি হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ শাসন আমলে ৯ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকলে দেশ কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছতে সক্ষম হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ গঠিত হয়। শনিবার এই দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এ দল ভাষা আন্দোলন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামসহ সকল গণ-আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা আওয়ামী লীগকে একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। কারণ, এ দল শুধু স্বাধীনতা সংগ্রামই নয়, দেশের জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নের আন্দোলনেও নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে। বঙ্গবন্ধুর বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশ পিছিয়ে গেছে। থেমে গেছে এ জাতির উন্নয়ন।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে, বাংলাদেশের জনগণ তখন অগ্রগতি প্রত্যক্ষ করে। দলের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নতুন অফিস ভবন উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এর ফলে চমৎকার পরিবেশে জনগণের জন্য কাজ করা যাবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয়, এ দল জাতির প্রতিটি অর্জনে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে। তাই, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের চেয়ে আওয়ামী লীগের দায়-দায়িত্ব অনেক বেশি। দলের নেতা-কর্মীদের এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতা কুক্ষিগত করে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়নি। বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের গভীরে এ দলের অস্তিত্ব বিদ্যমান। আমাদের এ কথা মনে রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া জোরদার করতে চায়। কোনো বড় ধরনের আপত্তি ছাড়াই বর্তমান সরকারের আমলে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায় ৬ হাজার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।