১০ বছরেও পাইলট প্রস্তুত করতে পারেনি বিমান

:
: ৫ years ago

উড়োজাহাজ আছে কিন্তু পাইলট নেই। ক্রু সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত, বিধায় নতুন উড়োজাহাজ যুক্ত হলেও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সঙ্কট কাটছে না। বিশেষ করে ক্রু সংকটের কারণে নতুন উড়োজাহাজগুলো থেকে কাঙ্ক্ষিত সার্ভিস পাওয়া যাচ্ছে না।

ককপিট ও কেবিন ক্রু সংকটে বিভিন্ন রুটে ফ্লাইট কমানোর চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে সংস্থাটি। সম্প্রতি ক্রু সংকটের কারণে লাভজনক ঢাকা আবুধাবি রুটে ড্রিমলাইনারের পরিবর্তে বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পরে মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস শাখার কঠোর মনোভাবের কারণে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়।

খাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতে, অপরিপক্কতা এবং অদূরদর্শিতার কারণে দশ বছর সময় পেলেও ক্রু বানাতে পারেনি বিমান। অথচ এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় বেসরকারি কোনো এয়ারলাইন্সের সময় লাগতো সর্বোচ্চ ছয় মাস।

২০০৮ সালে বিমান পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন কাজী ওয়াহিদুল আলম। এ বিষয়ে বিমান বাংলাদেশএয়ারলাইন্সের সাবেক পরিচালনা পর্ষদ সদস্য ও এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন, এর জন্য প্রথমত দায়ী দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা। ১০টি নতুন উড়োজাহাজের জন্য যখন এগ্রিমেন্ট হয় তখন আমি পরিচালনা পর্ষদ সদস্য ছিলাম। আমার মনে আছে, সে সময় নির্দিষ্ট রুটে চলার জন্য একটি প্ল্যান করা হয়েছিল। মূলত লং রুটের জন্য এই বিমানগুলোর অর্ডার করা হয়। সম্ভবত ওই প্লানের প্র্যাকটিস নষ্ট করে ফেলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বড় রুটগুলোতে চলাচলের অনুমতি না থাকায় ছোটখাটো রুটে ফ্লাইট চালিয়ে সমানে সাইকেল নষ্ট করছে। এতে নিকট ভবিষ্যতে এয়ারক্রাফট গুলোকে সি-চেক ও ডি-চেক করতে গিয়ে বড় অঙ্কের মাশুল গুনতে হবে। এয়ারক্রাফটগুলোর আয়ুষ্কাল কমে যাচ্ছে। এতে বিমান বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। সুষ্ঠু বাণিজ্যিক পরিকল্পনা না থাকায় বারবার একই ভুল করতেছে বিমান। নষ্ট করে ফেলা হচ্ছে দামি দামি এয়ারক্রাফটগুলোকে। এখানে জবাবদিহিতার কোনো বালাই নেই।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিয়োগ শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, ককপিটের কথা বলতে পারব না। তবে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত ৭৯ জন কেবিন ক্রু এখন প্রশিক্ষণ করছে। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের দিয়ে ইন-ফ্লাইট সার্ভিসের কাজ শুরু করানো হবে। তখন কেবিন ক্রু সমস্যা অনেকটা লাঘব হবে।

বিমানের মহাব্যবস্থাপক (বিপণন ও বিক্রয়) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, যাত্রী সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে, কিন্তু সে তুলনায় বিমানের ফ্লাইট ফ্রিকোয়েন্সিও বাড়া উচিত। কিন্তু পাইলট সঙ্কটের কারণে চলমান রুটগুলোতে ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক রাখা যাচ্ছে না।