হোল্ডিং ট্রাক্স পুনঃপর্যালোচনার জন্য খোদ মেয়র সাদিকের বাড়িতেই মাপঝোখ

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

হোল্ডিং ট্রাক্স পুনঃপর্যালোচনার জন্য খোদ বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ’র বাসস্থান মাপ-ঝোখ করা হয়েছে।

বুধবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে সিটি করপোরেশনের কর ধার্য শাখার কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে নগরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কালিবাড়ি রোডের ৫০৫ নম্বর হোল্ডিং এর বাড়িটি নতুন করে মাপঝোপ করা হয়।  এরআগে মাপঝোপ করার জন্য মালিকপক্ষকে লিখিত নোটিশ দেয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

মাপঝোপের সময় সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তাদের সার্বিক সহায়তায় বাড়ির মালিক পক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরিশাল মহানগর আওয়ামীলীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল, ওয়ার্ড কাউন্সিলর গাজী নঈমুল হোসেন লিটু।

মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বর্তমানে যে বাড়িটিতে বসবাস করেন সেই বাড়িটির হোল্ডিং তার দাদা আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের নামে রয়েছে বলে জানিয়ে কর ধার্য শাখার কর নির্ধারক বেলায়েত হোসেন বাবলু জানান, মেয়রের আবেদনের প্রেক্ষিতে হোল্ডিং ট্রাক্স বিষয়ক মাপঝোপ ও তথ্যাদি পুণঃপর্যালোচনা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, মূলত বর্তমানে নতুন স্থাপনা এবং স্থাপনা পরিবর্তন অর্থাৎ ৩ থেকে ৪ তলা কিংবা টিনের ঘর থেকে ভবন হয়েছে এমন ভবনে পুণঃপর্যালোচনার কাজটি করছি। পাশাপাশি বিগত দিনের মাপঝোপে কারও আপত্তি থাকলে তাও দেখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে ওয়ার্ড কাউন্সিলর গাজী নঈমুল হোসেন লিটু বলেন, বর্তমান মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ করপোরেশনের দায়িত্ব নেয়ার আগেই এটি একটি দেউলিয়া প্রতিষ্ঠানে রুপ নিয়েছে।  তবে তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর দেউলিয়া হওয়ার কারণ খুজতে গিয়ে নানান অনিয়ম পান। যারমধ্যে হোল্ডিং ট্যাক্সের বিষয়টি অন্যতম।

তিনি বলেন, হোল্ডিং ট্যাক্সের বিষয়ে খোজ নিয়ে দেখা হলো যাদের বছরে ১ লাখ টাকা ট্যাক্স দেয়ার কথা তারা দিচ্ছে মাত্র ১০ হাজার টাকা।  আবার যারা সমাজের বিত্তবান তারা নামমাত্র ট্যাক্স দিলেও যাদের লোবিং তৎবিরের ক্ষমতা নেই অর্থাৎ সাধারণ মানুষ তারা দিচ্ছে ক্ষমতাবানদের থেকে অনেক বেশি।

এটি সামনে আসার পর থেকে মেয়র ট্যাক্সের বিষয়ে বৈষম্য দূরে করে সমতা আনার কাজে হাত দেয়।  প্রথম পর্যায়ে যারা নতুন স্থাপনা উঠিয়ে কিংবা স্থাপনা পরিবর্তন করেও ফাঁকিঝুকি দিচ্ছিলো তাদের ট্যাক্সের আওতায় আনার কার্যক্রমও চলছে।  তবে নগরে নতুন করে কারো ট্যাক্স বাড়ানো হয়নি, ২০১৬ সালে সাবেক পরিষদের অনুমোদন দেয়া নির্ধারিত ট্যাক্সের রেট অনুসারেই কার্যক্রম চলছে।  আর এরমধ্য দিয়েই সিটি করপোরেশেনের আয়-ব্যায়ের ব্যবধান ঘোচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আজ পুনঃপর্যালোচনার মাধ্যমে মেয়র যে বাড়িতে বসবাস করেন, তার পুরোটারই (নতুন-পূরাতন স্থাপনাসহ) মাপঝোপ নতুন করে নেয়া হয়েছে।  পাশাপাশি বাড়িটি বানিজ্যিক নাকি আবাসিক সেটি খতিয়ে দেখা হয়েছে এবং বাড়ির মালিকরা এখানে বসবাস করেন কিনা।

এদিকে মেয়রের বাড়ি পুনপর্যালোচনার মধ্য দিয়ে ট্যাক্সে চলমান বৈষম্য দূর করে সমতা আনার কার্যক্রম আরো বেগবান হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ।

উল্লেখ্য বরিশাল সিটি করপোরেশন সূত্রে জানাগেছে, বরিশাল নগরের ৩০ টি ওয়ার্ডে ব্যক্তি মালিকানা ৫১ হাজার ৮৯২ টি হোল্ডিং রয়েছে এবং ৫৭০ টি সরকারি হোল্ডিং রয়েছে।  যারমধ্যে যাচাই-বাছাই করে ৫ হাজার ৪ শত হোল্ডিং নম্বরে নতুন স্থাপনা নয়তো স্থাপনা পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে সিটি করপোরেশন। যাদের হোল্ডিং ট্যাক্স নতুন করে নয়তো পুনপর্যালোচনা করে নির্ধারণ করা হচ্ছে।