দৃষ্টিকটু একেকটি শটে প্রতিপক্ষকে উইকেট উপহার দেওয়া। ছন্দময় বোলিংয়ের বিপক্ষে এলোমেলো ব্যাটিং। ফলাফল যা হওয়ার তাই হলো। গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের বিপক্ষে বেক্সিমকো ঢাকা অলআউট ৮৮ রানে।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চট্টগ্রামের দুই ওপেনার ছড়ালেন মুগ্ধতা। উইকেটের চারিপাশে ধ্রুপদী সব শটে বোলাররাও দিশেহারা। ৫৫ বল ও ৯ উইকেট হাতে রেখে ‘বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ স্পন্সরড বাই ওয়ালটন’-এ যাত্রা শুরু করল চট্টগ্রাম।
মুশফিকুর রহিমের কী হয়েছিল একমাত্র তিনিই বলতে পারবেন। ডানহাতি অফস্পিনার নাহিদুলের প্রথম বলে রিভার্স সুইপ খেলার চেষ্টা করলেন। গ্লাভসে লেগে বল গেল স্লিপে। সৌম্য সহজ ক্যাচ ধরে ঢাকার অধিনায়ককে সাজঘরের পথ দেখান। এর আগে সাব্বির রহমান যা করেছিলেন তা রীতিমত বিরক্তি ধরায়! নয় বল ডট খেলার পর দশম বলে উইকেট উপহার দিয়ে আসেন।
শুরুটা অবশ্য তানজিদ তামিমকে দিয়ে। শরীফুলের অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে স্লিপে সৌম্যর হাতে ক্যাচ দেন ২ রানে। আকবর আলীর ওপর ভরসা ছিল। কিন্তু তিনিও আউট হন দৃষ্টিকটু শটে। মোসাদ্দেকের শর্ট বল কাট করতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে বোল্ড হন ১৫ রানে। শাহাদাত হোসেন দীপুকে আউট করে মোস্তাফিজুর রহমান খোলেন উইকেটের খাতা।
ব্যাটিং ব্যর্থতার দিনে ব্যতিক্রম ছিলেন নাঈম শেষ। শরীফুলকে কভার ড্রাইভে বাউন্ডারি মেরেছেন অনায়েসে। মোস্তাফিজুর রহমানকেও প্রায় একই শটে পাঠিয়েছেন বাউন্ডারিতে। পরের বলেই মোস্তাফিজকে তুলে মেরে হাওয়ায় ভাসিয়ে সীমানার বাইরে পাঠান। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামকে উইকেটে স্বাগত জানান দুই ছক্কায়। প্রথমটি মিড উইকেট দিয়ে, পরেরটি লং অনে। তবে প্রতিশ্রুতিশীল ইনিংসটি কাটা পড়ে ভুল শটে। মোসাদ্দেকের শরীরের ওপরে আসা বলে টাইমিংয়ে গড়বড় করে বোল্ড হয়েছেন ৪০ রানে। ২৩ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংসটি।
শেষ পর্যন্ত ঢাকার ইনিংসটি থামে ৮৮ রানে। নাঈম ও আকবর বাদে দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেন মুক্তার আলী (১২)। চট্টগ্রামের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন শরীফুল, মোস্তাফিজুর, মোসাদ্দেক ও তাইজুল। ১টি করে উইকেট পান নাহিদুল ও সৌম্য।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সৌম্য ও লিটন ছিলেন ধ্রুপদী। চোখ ধাঁধানো একেকটি শটে তারা বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন চাইলেই সেখানে বড় স্কোর করা সম্ভব ছিল। রুবেল হোসেনকে প্রথম ওভারে স্ট্রেইট ড্রাইভে দুই বাউন্ডারি হাঁকান সৌম্য। পরের ওভারে মেহেদী হাসান রানাকে ফ্লিক করে মিড উইকেট দিয়ে উড়ান ছক্কায়। থেমে থাকেননি লিটন। রুবেলের দ্বিতীয় ওভারে কভার ড্রাইভে চার মারেন সহজেই। এক ওভার পর ডানহাতি পেসারকে পুল করে হাঁকান ছক্কা। শুধু বাউন্ডারিতে সীমাবদ্ধ থাকেনি তাদের ব্যাটিং। প্রায় প্রতি ওভারে একটি-দুইটি বাউন্ডারি বাদেও স্ট্রাইক রোটেট করেছেন দারুণভাবে।
পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে তাদের রান ৫১। সপ্তম ওভারের শেষে মুক্তার আলীর শর্ট বল সৌম্য পাঠান গ্যালারিতে। দারুণ আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিংয়ে দুই ব্যাটসম্যান লক্ষ্যের পথে এগিয়ে যায় সহজেই। ১০ রান দূরে থাকতে নাসুমের বলে লিটন বোল্ড হন ৩৪ রানে। বাকি কাজ সারেন সৌম্য ও মুমিনুল।
২৯ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় সৌম্য অপরাজিত থাকেন ৪৪ রানে। মুমিনুলের ব্যাট থেকে আসে ৮ রান।
দুই ম্যাচের দুইটি হেরে ঢাকা ব্যাকফুটে। অন্যদিকে জয় দিয়ে যাত্রা শুরু করলো চট্টগ্রাম। তাদের নায়ক মোসাদ্দেক হোসেন।