বগুড়ায় আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তিনি বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। বগুড়ার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ এ কথা জানান।
রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, স্বতন্ত্র হিসেবে কেউ প্রার্থী হতে চাইলে বা নির্বাচন করতে চাইলে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর দাখিল করার কথা। কিন্তু তাঁর মনোনয়নপত্রে নির্ধারিত ভোটারের স্বাক্ষর ছিল না।
এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পাটির ‘লাঙ্গল’ মার্কার মনোনয়ন না পেয়ে বগুড়া-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন সিডি ব্যবসায়ী থেকে তারকা বনে যাওয়া হিরো আলম। মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ার পর হিরো আলম বলেন, ‘ষড়যন্ত্র করে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। আমি নিয়ম মেনেই সব দাখিল করেছিলাম। কিন্তু ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। কোনো ষড়যন্ত্রে মাঠ ছাড়ব না। আপিল করব। আগেই বলেছিলাম শেষ দিন পর্যন্ত মাঠে থাকব, এখনো সে সিদ্ধান্তে অটল রয়েছি।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত হিরো আলম গত বুধবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে নন্দীগ্রাম উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ইউএনও মোছা. শারমিন আখতারের কাছে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
বগুড়া সদরের এরুলিয়া গ্রামে সিডি বিক্রি এবং কেবল সংযোগের ব্যবসা করতেন হিরো আলম। পরে কেবল সংযোগের ব্যবসার সুবাদে মিউজিক ভিডিও তৈরি শুরু করেন। প্রায় ৫০০ মিউজিক ভিডিও এবং ৮০টি ইউটিউব চলচ্চিত্র ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় তাঁকে নিয়ে ট্রল হয়। ‘মার ছক্কা’ নামে একটি চলচ্চিত্রে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। বলিউড পরিচালক প্রভাত কুমারের ‘বিজু দ্য হিরো’ নামে একটি চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধও হয়েছেন তিনি।
২০১৬ সালে হিরো আলমের সঙ্গে ছবি তুলে ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ফেসবুকে প্রকাশ করেন। এ নিয়ে বিবিসি হিন্দি, জি নিউজ, এনডিটিভি, ডেইলি ভাস্কর, মিড-ডের মতো ভারতের প্রথম সারির সংবাদমাধ্যমগুলো তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন করে। সেখানে হিরো আলমকে বাংলাদেশের বিনোদন জগতের তারকা বলে উল্লেখ করা হয়।
গুগলে কাকে সবচেয়ে বেশিবার খোঁজা হয়, তার একটি তালিকা করে ইয়াহু ইন্ডিয়া। জরিপে দেখা গেছে, ‘সুলতান’ ও ‘দাবাং’ তারকাখ্যাত সালমান খানের চেয়েও বেশিবার খোঁজা হয়েছে হিরো আলমকে। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত তিনি।
বগুড়া-৪ আসনে হিরো আলমসহ ১৬ জন মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন। এর মধ্যে বাছাইয়ের দিনে হিরো আলমসহ সাতজনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। হিরো আলম ছাড়া মনোনয়ন বাতিল হওয়া অন্যরা হলেন—স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা জামায়াতের সাবেক নায়েবে আমির ও কাহালু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা তায়েব আলী, অধ্যাপক জাহিদুর রহমান, জীবন রহমান, ইউনুস আলী, এ এন এম আহসানুল হক ও কামাল উদ্দিন কবিরাজ। এ আসনে বৈধ প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট ও জাসদ প্রার্থী একেএম রেজাউল করিম, বিএনপির মোশারফ হোসেন, জিয়াউল হক মোল্লা ও সাইফুল ইসলাম, আনিসুর রহমান, কাজী এম এ কাশেম, আয়ুব আলী, ইদ্রিস আলী ও জাপার নুরুল আমিন।