বরিশাল ব্যুরো ॥ হিজলায় জেলে শরিফ তপাদার (২৪) কে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে মরহুমার মা বাদী হয়ে নামধারী ৫ সহ অজ্ঞাতনামা ১২/১৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করলেও এখন পর্যন্ত কোন আসামি কে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিজলা থানার সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মো. নুর আমিন বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান চলমান রয়েছে।
চলতি বছরের ১ এপ্রিল উপজেলার পালপাড়া গ্রামের হানিফ তপাদারের স্ত্রী সাহিদা বেগমের (৪৭) হিজলা থানায় দায়েরকৃত মামলার আসামীরা হলেন- একই গ্রামের আবদুল রশিদ আকনের ছেলে মো. বাবুল আকন (২৭), মো. দুলাল মাঝির ছেলে আল আমিন মাঝি (২৬), আ. মতিন ওরফে মতু পাটোয়ারীর ছেলে রাজিব পাটোয়ারী (৩০), স্থানীয় মৃত বাছেদ রাঢ়ির জামাই নোমান হোসেন (৩০) ও আবুল রাঢ়ির ছেলে মাইদুল রাঢ়ি (২৮) সহ অজ্ঞাতনামা ১২/১৪ জন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, বাদী একজন গৃহিণী। তার ছেলে শরিফ তপাদার (২৪) নদীতে জাল বাইচ করে জীবিকা নির্বাহ করে। আসামীরা এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ নদীতে চলতি ও নোঙর করে রাখা জাহাজ থেকে চাঁদা উঠানো সহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছে।
ঘটনার দিন গত ২৯/০৩/২০২৫ ইং তারিখ সন্ধ্যার দিকে তার ছেলে-শরিফ বাড়িতে ইফতার করার পর আলীগঞ্জ লঞ্চ যাটে যায়। সেখান থেকে তার বন্ধু সঙ্গীয় সোহাগ আকন ও আরফান মোল্লা তাদের মাছ বিক্রয়ের পাওয়া টাকা-পয়সা বণ্টন করায় জন্য নদীর পাড় যায়।
আসামিদের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়- তারা জাহাজ থেকে যে চাঁদার টাকা উত্তোলন করে, হয়ত সেই টাকা শরিফ তপাদার ও তার সঙ্গীয়রা উত্তোলন করেছে। যে কারণে পথিমধ্যে রাত অনুমান সাড়ে ৮ টায় হিজলা থানাধীন ৬নং ধুলখোলা ইউনিয়ানের পালপাড়া সাকিনস্থ হিজলা পি, এন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বাথুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যবর্তী স্থানে স্থানীয় জুয়েল সরমানের বাঁশ ঝাড়ের সামনে মেঘনা নদীর পাড়ে পৌঁছামাত্র, পূর্ব দিক থেকে আসামি বাবুল আকনের নেতৃত্বে আসামি আল-আমিন মাঝি, রাজিব পাটোয়ারী, নোমান হোসেন ও মাইদুল রাঢ়ি সহ অজ্ঞাতনামা ১২/১৪ জন আসামিরা দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্রে-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার ছেলে (ভিকটিম) শরিফ তপাদারকে সহ অন্যান্যদের পরিকল্পিত ভাবে খুনের উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি মারধর করে তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত-বিক্ষত নীলা, ফোলা, ছোলা কালো দাগ প্রকৃতির বেদনা দায়ক জখম করে। তখন শরিফের সাথে থাকা অন্যান্যরা হামলায় আহত হয়ে দ্রুত দৌড়াইয়া পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা আহত শরিফ কে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলেও উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে গত ৩০/০৩/২০২৫ ইং তারিখ রাত সাড়ে ১২টায় জরুরি বিভাগের কর্মরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার জিডি নং-১৭৬০, তারিখ- ৩০/০৩/২০২৫ ইং মোতাবেক এস.আই মো. শহিদুল ইসলাম মৃত শরিফ তপাদারের মৃতদেহের সুরত-হাল প্রতিবেদন তৈরি করে এবং মৃতদেহের ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।