বাঁচার প্রচণ্ড আকুতি নিয়ে ছোট ভাইকে শেষবারের মতো অশ্রুভেজা চিঠি লিখলেন বড় বোন। এরপর থেকে কারও সঙ্গে কোনো কথা বলেননি তিনি। তবে বোনের অশ্রুভেজা সেই চিঠির জবাব দিতে পারেনি ছোট ভাই।
গত মঙ্গলবার ভাইয়ের কাছে বাঁচার আকুতি জানিয়ে অশ্রুভেজা এ চিঠি লিখেন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ঝাড়বাড়ী মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আফরিন।
চিঠিতে আফরিন লিখেছেন, ‘ভাই আমি বাঁঁচবো তো, আমাকে একা রেখে বাইরে কেন তুই? আমার চোখের সামনে থেকে আড়াল হইছ না, আমাকে ফেলে যাইছ না, যেখানে যাস ১০ মিনিট পর পর আমার কাছে ফিরে আসবি ভাই।’
বোনের অশ্রুভেজা চিঠি ভাইয়ের হাতে দেন চিকিৎসকরা। বোনের চিঠি খুলে পড়তে পড়তে কেঁদে ফেলে ছোট ভাই ঝাড়বাড়ী দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র রিফাত।
কাঁদতে কাঁদতে রিফাত ছুটে যায় বোনের কাছে। গিয়ে দেখে বোন তখন লাইফ সাপোর্টে। বোনের কাছে গেলেও চিঠির কোনো জবাব কিংবা সান্ত্বনা দিতে পারেনি রিফাত। বলতে পারেনি কোনো কথা। কারণ ওই চিঠির পর থেকে গত চারদিন কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেনি আফরিন। কিন্তু হাসপাতাল ছাড়েনি ছোট ভাই। বোনের লেখা চিঠির কথা অনুযায়ী ১০ মিনিট পর পর লাইফ সাপোর্টে থাকা বোনের কাছে ছুটে যায় রিফাত। তাকিয়ে দেখে, এই বুঝি বোনের জ্ঞান ফিরল, বোন মনে হয় কিছু বলবে- সে অপেক্ষায় হাসপাতালে দিনরাত কাটছে ছোট ভাইয়ের।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ১৭ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে আফরিনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের ভর্তি করা হয়। দুইদিন সবার সঙ্গে কথা বলতে পারলেও এরপর থেকে অচেতন রয়েছেন আফরিন। বর্তমানে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। ঝাড়বাড়ী মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আফরিন দরিদ্র বাবা আশরাফ আলীর মেয়ে। মেয়ের চিকিৎসা খরচ চালাতে অসহায় তার বাবা। দিনে এনে দিনে খাওয়া বাবার পক্ষে মেয়ের চিকিৎসা খরচ চালানো সম্ভব নয়।
রংপুর হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মায়েস্থেনিয়া গ্রেভিস (Mzasthenia Gravis) বিরল রোগে আক্রান্ত আফরিন। ঢাকার ভালো কোনো হাসপাতালে নিয়ে তার চিকিৎসা করা প্রয়োজন। বর্তমানে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
হাসপাতালে আফরিনের সঙ্গে থাকা চাচাতো ভাই রিয়াজুল ইসলাম বলেন, গত ১৭ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে আফরিনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করা হয়। ১৮ নভেম্বর অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। বর্তমানে সে রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. শাহ মো. সরওয়ার জাহানের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন।
আফরিনের আরেক চাচাতো ভাই মো. রাজু আহমেদ বলেন, প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। কিন্তু আফরিনের গরিব বাবার পক্ষে এত টাকা খরচ বহন করা অসাধ্য হয়ে পড়েছে। আমরা সবাই এক হয়ে আরফিনের চিকিৎসার জন্য কিছু করতে পারি। সমাজের বিত্তবান মানুষ এগিয়ে এলে আফরিনের জীবন বেঁচে যাবে। সুস্থ হয়ে আবারও ছোট ভাইকে ভাই বলে জড়িয়ে ধরতে পারবে। সবার সহযোগিতা পেলে আফরিন সুস্থ হয়ে আবার আমাদের মাঝে ফিরে আসবে। প্লিজ, সবাই আফরিনের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে আসুন।
বোনের চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে ছোট ভাই রিফাত জানায়, আমি শুধু আমার বোনকে সুস্থভাবে ফিরে পেতে চাই। আমার বোনকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন সবাই। আমি জোড় হাত করে বলছি; আমার বোনকে বাঁচান।
আফরিনকে সহযোগিতা পাঠানোর জন্য চাচাতো ভাই মো. রাজু আহমেদ (০১৭২২৩৫৬৬৪২) ও মো. রিয়াজুল ইসলামের (০১৭৩৩১০৬৮৫৪) মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।
বোন আফরিনকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা দুই ভাই। অথবা ডাচ-বাংলা অ্যাকাউন্ট (৭০১৭০১৫৭৪০৯৪৮) নম্বরেও যে কেউ আফরিনের জন্য সহযোগিতা পাঠাতে পারবেন।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com