হাসপাতালে ৪০ মিনিট ছটফট করে মারা গেল শিশুটি

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

হাসপাতালে মৃত শিশুর নাম আলিম শেখ। সে সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের মামুন শেখের ছেলে এবং আলাদীপুর আরসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

ঘটনার সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ছিলেন মনিজা। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা চিকিৎসকের গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার সকালে আরসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দোলনা উল্টে বুকে আঘাত পায় আলিম। তাকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে স্কুল কর্তৃপক্ষ ও আলিমের স্বজনরা। হাসপাতালে এনে ভর্তির ৪০ মিনিট পর্যন্ত ডাকাডাকি করেও কোনো চিকিৎসকের দেখা পাননি তারা। অবশেষে মারা যায় আলিম।

আলিমের স্বজনরা জানান, আহত আলিমকে হাসপাতালে ভর্তির পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মনিজা বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করে ফেসবুকে ব্যস্ত ছিলেন। বারবার ডাকার পরও শিশুটির কাছে আসেননি চিকিৎসক মনিজা। ফলে ৪০ মিনিট ছটফট করে আলিম মারা যায়।

আলাদীপুর আরসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহজাদা শেখ বলেন, সকালে বিদ্যালয়ের দোলনায় খেলছিল শিশুরা। এ সময় আলিম পাশে দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিল। হঠাৎ দোলনা উল্টে আলিমের ওপর পড়ে। এতে আলিম আহত হয়। আমরা তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু হাসপাতালে আনার পর জরুরি বিভাগে ভর্তির স্লিপ, এক্স-রে ও বিভিন্ন অজুহাতে সময় বিলম্ব করে চিকিৎসক মনিজা। ওই সময় নারী চিকিৎসক মনিজাকে বারবার ডাকলেও শিশুটিকে দেখতে আসেননি। এভাবে ৪০ মিনিট জরুরি বিভাগের বেডে ছটফট করে মারা যায় শিশু আলিম। চিকিৎসকের অবহেলার কারণে শিশু আলিম মারা গেছে। চিকিৎসক মনিজার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

এ বিষয়ে জেলা পরিষদের সদস্য নাজমুল হাসান মিন্টু বলেন, হাসপাতালে গিয়ে জেনেছি চিকিৎসকের অবহেলায় শিশু আলিম মারা গেছে। যিনি চিকিৎসায় অবহেলা করেছেন এবং যার কারণে শিশুটি মারা গেছে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।

শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. আলী আহসান বলেন, ঘটনার সময় আমি হাসপাতালে ছিলাম না। বিষয়টি শুনে হাসপাতালে এসে শিশুটির সব ফাইলপত্র দেখেছি। এক্স-রে পরীক্ষায় দেখা যায় শিশুটির কোমরের হাড় ভেঙে গেছে। সেই সঙ্গে তার পেটের নিচের অংশ ফুলে যায়। এমন রোগীর চিকিৎসা হলো ভেন্টিলেশন। যা আমাদের এখানে নেই।

তিনি বলেন, আমাদের হাসপাতালে যদি ভেন্টিলেশন বা আইসিইউ সিস্টেম থাকত তাহলে আজ এমন ঘটনা ঘটত না। রোগীর স্বজনরা ওই সময়ে দায়িত্বরত এক চিকিৎসকের নামে অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনা তদন্তে আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। অভিযোগ পেলে ওই নারী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।