গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্ত্রীর লাশ ফেলে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের শ্বশুরকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (১১ জুলাই) রাতে এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া গৃহবধূর নাম বর্ষা রাণী রাজভর (১৮)। তিনি গাজীপুর মহানগরের পশ্চিম বিলাশপুর এলাকার বাদল রাজভরের মেয়ে। তিনি গাজীপুর বিজ্ঞান কলেজের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্রী ছিলেন।
পালাতক স্বামীর নাম দীপ্ত রাজভর (২৪)। তিনি গাজীপুর মহানগরের উত্তর বিলাশপুর এলাকার রামনাথ রাজভরের ছেলে।
মারা যাওয়া বর্ষার পরিবার জানায়, গত বছরের মার্চ মাসে প্রেম করে বর্ষা রাণী ও দীপ্ত বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর বাড়ির লোকজন মেয়েকে আমাদের বাড়িতে তেমন আসতে দিতেন না। বর্ষার স্বামী বেকার। বিভিন্ন সময় স্বামী ও শাশুড়ি মিলে যৌতুকের জন্য বর্ষাকে চাপ দিতেন। সর্বশেষ দীপ্ত’র দাদিকে দিয়ে বর্ষার কাছে ৫ লাখ টাকা ও তিন ভরি স্বর্ণালঙ্কার যৌতুক দাবি করেছিলেন শ্বশুর বাড়ির লোকজন। আর এসব নিয়ে প্রায়ই বর্ষা ও দীপ্তর মধ্যে ঝগড়া হতো।
সোমবার রাত ৮টার দিকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়েছিল। রাত সাড়ে ১০টার দিকে দীপ্তর বাবা রামনাথ মোবাইলে ফোন করে জানান, বর্ষা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। রাত ১১টার দিকে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে গিয়ে মেয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় বর্ষার স্বামী দীপ্ত ও তার পরিবারের কোনো সদস্য হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না। এখন পর্যন্ত তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. রফিকুল ইসলাম জানান , সোমবার রাত ১১টার দিকে দীপ্ত মৃতাবস্থায় হাসপাতালে বর্ষার লাশ রেখে গেছে। হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে বিষয়টি লিপিবদ্ধ রয়েছে। বর্ষার লাশের ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না।
জয়দেবপুর থানার এসআই মো. মোশারফ হোসেন জানান, নিহতের কপালে ও গলার নিচে কালো দাগ রয়েছে। সোমবার রাতেই দীপ্তর বাবা রামনাথকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। স্বামী-শাশুড়িসহ পরিবারের লোকজন ঘরে তালা আটকিয়ে পালিয়ে গেছে। লাশ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্তের পর এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা৷ জানা যাবে।