হারিয়ে যাওয়া গণ-অভ্যূত্থানের নায়ক আলাউদ্দিন (পর্ব-০১)

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

এ. এইচ শামীম| মোঃ আলাউদ্দিন খান। জন্ম ০১লা জানুয়ারী ১৯৫২ সালে পটুয়াখালী জেলাধীন কলাপাড়া উপজেলার অন্তর্গত নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব হাজিপুর গ্রামে। মোঃ মমতাজ উদ্দিন মৌলভী ও রাশিদা বেগম দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে আলাউদ্দিন খান ছিলেন ছোট সন্তান। একমাত্র বোন মাহমুদা বেগম ছিলেন বড়। জন্মের মাত্র দুই বছরের মাথায় ১৯৫৪ সালে তার বাবা চলে গেলেন না ফেরার দেশে। দৃঢ়চেত্তার মন নিয়ে শিশু বয়সে হাজিপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পরবর্তীতে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস সেভেন পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। পরে ১৯৬৭ সালে বরিশাল লাকুটিয়ায় মামা বাড়িতে আসেন এবং বরিশালের গীর্জা মহল্লায় এ,কে স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি হন।

পড়াশোনায় ছিলেন বিদ্যালয়ের অন্যান্যদের মধ্যে মেধাবী, মন দিয়ে পড়াশোনা শুরু করলেন। বাড়িতে চিঠি দিয়ে খোঁজ খবর রাখতেন বিধবা মা ও একমাত্র বোনের। অষ্টম শ্রেনীতে পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ন হয়ে ভর্তি হন নবম শ্রেণীতে। এর আগে ১৯৬৮ সালের নভেম্বরের ছাত্র অসন্তোষকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে যে আন্দোলনের সূত্রপাত হয় তা দ্রুত ছড়িয়ে পরে শহর এবং গ্রামের শ্রমিক-কৃষক, ছাত্র-শিক্ষকসহ সকল স্তরের মানুষের মাঝে। এরই অংশ হিসেবে সারাদেশের মতো বরিশালেও শুরু হয় আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন।

১৯৬৯ সালের ২৮ জানুয়ারী মায়ের কাছে চিঠি পোস্ট করে ফিরছিলেন। আসার পথে আন্দোলনের প্রস্ততি দেখে নিজেকে আর দমিয়ে রাখতে পারেননি, তিনিও যোগ দিয়েছিলেন সেইদিনের আন্দোলনে। মিছিল চলাকালীন সময়ে পাকিস্তানি ইপিআর এর গুলিতে বরিশালের রাস্তায় রক্তে রঞ্জিত হন আলাউদ্দিন খান। পরদিন তার লেখা চিঠি মায়ের হাতে পৌছানোর আগেই বিকেল চারটায় তিনি লাশ হয়ে ফিরলেন মায়ের বুকে। কিছুবছর পূর্বে স্বামীকে হারানো বৃদ্ধ মা ছেলের এভাবে মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না। এলাকার মানুষের সহায়তায় তাকে নিজ বাড়ির কবরস্হানে দাফন করা হয়।

তথ্য ও ছবিঃ উইকিপিডিয়া, শহীদ মোঃ আলাউদ্দিন খানের সহপাঠী মোঃ শামস উদ্দিন ভূইয়া ও এলাকার মুরুব্বী।