হাথুরুর লঙ্কাকে বিশাল ব্যবধানে হারাল টিম টাইগার

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago
পুরো ম্যাচেই এমন উল্লাস করতে দেখা গেছে চন্দিকা হাথুরুসিংহের সাবেক শিষ্যদর। ছবি: এএফপি

শংকা ছিল সদ্য সাবেক হওয়া প্রধান কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে টাইগারদের সব নাড়ি নক্ষত্র লঙ্কান ক্রিকেটারদের কাছে ফাঁস করে দিয়েছেন। কিন্তু হাথুরুর একসময়ের সহকারী রিচার্ড হ্যালসল রেগেমেগে আসল সত্যটা বলেছিলেন, মাঠে তো আর হাথুরু গিয়ে খেলে আসবেন না। সেই সত্যই বাস্তবে রচিত হল আজ। মাশরাফি বাহিনীর কাছে ১৬৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরে গেল প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়ের কাছে হারা শ্রীলঙ্কা। টাইগারদের টানা দুই ম্যাচ জয়ের বিপরীতে টানা দুই ম্যাচ হারল হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।

৩২১ রানের বিশাল টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ২ রানেই ধাক্কা খায় শ্রীলঙ্কা। ব্যাট হাতে ‘ডাক’ মারলেও তৃতীয় ওভারেই কুশল পেরেরাকে (১) সরাসরি বোল্ড করে দেন অল-রাউন্ডার নাসির হোসেন। এরপর দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন অপর ওপেনার উপুল থারাঙ্গা এবং উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান নিরোশান ডিকাভেলা। দলীয় ৪৩ রানে থারাঙ্গাকে (২৫) ফিরিয়ে প্রতিরোধ ভাঙেন অধিনায়ক মাশরাফি।

লঙ্কানদের তৃতীয় উইকেটেরও পতন ঘটান মাশরাফি। তিন নম্বরে নামা কুশল মেন্ডিসকে রুবেল হোসেনের তালুবন্দি করেন টাইগার ক্যাপ্টেন। উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান নিরোশান ডিকাভিলাকে (১৬) দারুণ একটি শর্ট লেন্থ ডেলিভারিতে বোল্ড করে প্রথম শিকার ধরেন মুস্তাফিজ। অধিনায়ক চান্ডিমালকে (২৮) অসাধারণ দ্রুততায় সাকিব রান-আউট করে দিলে মহাবিপদে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা।

এরপর লংকান শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ২৬তম ওভারে পরপর দুই বলে তিনি ফিরিয়ে দেন অ্যাশরে গুনারত্নে (১৬) এবং ভানিদু হাসরাঙ্গাকে (০)। টাইগারদের জয়টা তখন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। ৭ নম্বরে নেমে ১৪ বলে ২৯ করা থিসারা পেরেরাকে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি করে তৃতীয় শিকার ধরেন সাকিব। রুবেলের বলে বোল্ড হয়ে যান লাকমল (১)। আকিলা ধনঞ্জয়া (১৪) রুবেলের বলে সাকিবের তালুবন্দি হতেই ৩২.২ ওভারে ১৫৭ রানেই অল-আউট হয়ে যায় শ্রীলঙ্কা।

এর আগে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩২০ রানের পাহাড় গড়ে বাংলাদেশ। দলকে চমৎকার সূচনা এনে দেন তামিম ইকবাল এবং এনামুল হক বিজয়। শুরুতেই ক্যাচ দিয়ে জীবন পাওয়ার পর তামিমের সঙ্গে ৭১ রানের জুটি গড়েন বিজয়। অতঃপর ৩৭ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ৩৫ রান করে থিসারা পেরেরার বলে উইকেটকিপার নিরোশান ডিকাভেলার গ্লাভসবন্দি হন এনামুল।

তবে ৭২ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ক্যারিয়ারের ৪০তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। হাফ সেঞ্চুরির পর হাত খুলতে শুরু করেন তামিম। টার্গেট দশম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে ৮৪ রানেই থামতে হল তাকে। আকিলা ধনঞ্জয়ার বলে ডিকাভেলার গ্লাভসবন্দি হওয়ার আগে ১০২ বলের ইনিংসে মেরেছেন ৭টি চার এবং ২টি ছক্কা। সাকিবের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে তার জুটি ৯৯ রানের।

তিন নম্বর পজিশনের মান রেখে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিব। অষ্টম সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যেতে যেতে গুনারত্নের বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে থামতে হল তাকে। আউট হওয়ার আগে  সাকিবের সংগ্রহ ৬৩ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ৬৭ রান। অপর প্রান্তে হাত খুলে খেলছিলেন মুশফিক। ৩ চার ১ ছক্কায় ক্যারিয়ারের ২৮তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিলেন ৪২ বলে। ভায়রা ভাই মাহমুদ উল্লাহ তাকে দারুণ সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তবে ২৩ বলে ২৪ রান করে নুয়ান প্রদিপের শিকার হন তিনি।

মুশফিকের সঙ্গী হন সাব্বির। ৫২ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ১ ওভার বাউন্ডারিতে ৬২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে থিসারা পেরেরার ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে যান মুশফিক। ২৮৪ রানে দল তখন দারুণ পজিশনে। অধিনায়ক মাশরাফি উইকেটে এসে বাউন্ডারি হাঁকালেও ৬ রানের বেশি করতে পারেননি। নাসির ফিরেন ‘গোল্ডেন ডাক’ মেরে। তবে শেষের দিকে সাব্বিরের (২৪*) ব্যাটিং দাপটে স্কোর ৩০০ ছাড়িয়ে যায়। সুরঙ্গা লাকমলের করা শেষ ওভারে সাব্বির-সাইফ নেন ১৯ রান। টাইগারদের স্কোর দাঁড়ায় ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩২০ রান।