হাথুরুর ওপর কোনো ক্ষোভ নেই বিজয়ের

:
: ৬ years ago

শুরু দেখে মনে হচ্ছিল রেসের তেজী ঘোড়া। যাবে বহুদূর। ক্যারিয়ারের প্রথম ২০ ওয়ানডেতে তিনি যা করে দেখিয়েছেন তা নেই বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটসম্যানের। প্রথম কুড়ি ম্যাচে তিন সেঞ্চুরি।

বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে যে তিন-চারজন ব্যাটসম্যানের ওয়ানডে রেকর্ড দারুণ সমৃদ্ধ, সেই হাবিবুল বাশার, মোহাম্মদ আশরাফুল, তামিম ইকবাল আর সাকিব আল হাসানের কেউ যা পারেননি। কিন্তু এনামুল হক বিজয় প্রথম ২০ ওয়ানডেতে সেইসব পূর্বসুরীদের ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। অবশ্য শেষ পর্যন্ত আর ব্যাটের সেই উজ্জ্বল রূপ থাকেনি। রানের ফলগুধারাও আর বয়নি। যতই সময় গড়িয়েছে, ততই অনুজ্জ্বল হয়েছে এনামুল হকের ব্যাট।

তাইতো ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি (১৪৫ বলে ১২০) ২০১২ সালের ২ ডিসেম্বর খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে) দিয়ে শুরু করা বিজয় এক সময় দলের বাইরে চলে গেছেন। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে শেষ ম্যাচ খেলেছেন ২০১৫ সালের ৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের নেলসনে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে।

অথচ পরিসংখ্যান কিন্তু মন্দ নয়, ভালো। ৩০ ম্যাচে ২৭ বার ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে সমান তিনটি হাফ আর সেঞ্চুরিতে ৩৫.১৮ গড়ে রান ৯৫০।
বিজয়ের আসল সমস্যা স্ট্রাইকরেটে। যেখানে তামিম (৭৮.৩৬), সৌম্য (৯৬.৬০) লিটন দাস (৭৬.৭৪) এনামুল হক বিজয়ের ওপরে। শুধু ইমরুল কায়েসের স্ট্রাইকরেটই তার চেয়ে কম।

চার ও ছক্কা হাকানোর পর্যাপ্ত সামর্থ থাকলেও বলের তুলনায় রান তোলায় অন্য সব টপ অর্ডারদের চেয়ে দিনকে দিন পিছিয়ে পড়া। সাবেক কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহে এ কারণেই তাকে পছন্দ করতেন না। ভাবা হয় হাথুরুর অপছন্দের কারণেই এতকাল বাইরে ছিলেন বিজয়।

অবশেষে দলে ডাক পাওয়া। সে কারণেই দলে ফেরার পর মিডিয়ার মুখোমুখি হতেই প্রশ্ন, ‘শোনা যায় হাথুরুসিংহে নাকি আপনার ব্যাটিং পছন্দ করতেন না। এ সম্পর্কে আপনার বক্তব্য কী?

বিজয়ের জবাব, ‘ওইভাবে কখনো ভাবিনি। একজন একজনকে অপছন্দ করতেই পারে। এটা জোর করে কিছু হয় না। আমার জন্য পারফর্ম করে যাওয়াই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। এ জন্য তাই বিশ্বাস ছিলই। কোচের বিষয়ে তাই চিন্তা ছিল না। কেউ আসবে, কেউ যাবে ; কিন্তু আমাকে খেলে যেতেই হবে।’

এবার কি তবে নতুন বিজয়ের দেখা মিলবে? বিজয়ের প্রত্যাশা, ‘খেলি, দেখা যাক। দোয়া করবেন। মনে হয় ভালো কিছু করতে পারবো।’

এ দু বছরের বেশি সময় পর জাতীয় দলে ঢোকার আগে টেকনিকে কোনো পার্থক্য এসেছে? এমন প্রশ্নর জবাবে এনামুল হক বিজয় ঠিক পরিষ্কার বা নির্দিষ্ট করে বলতে পারলেন না, হ্যাঁ ওই জায়গায় সমস্যা ছিল। তিন বছরে এই জায়গায় উন্নতি করেছি। তার বদলে তার মুখে এমন কথা, ‘এ সময়ের মধ্যে অনেক কিছুই চেষ্টা করেছি। চেষ্টা করেছি নতুন কিছু করার। যদি লম্বা রান করতে পারি, যদি দলকে যদি কিছু দিতে পারি ; তখন হয়তো বোঝা যাবে কী করতে পারি।

বলা হচ্ছে সৌম্যের রান নেই, লিটনও সুবিধা করতে পারেনি। সেই খালি জায়গা পূরণের লক্ষ্যেই কি এই সিজনে ভালো কিছুর চেষ্টা ছিল? বিজয় অবশ্য তা মানলেন না। সোমবার বিকেলে মিডিয়ার সঙ্গে আলাপে এমন প্রশ্ন উঠতেই খানিক পাশ কাটিয়ে যাওয়া- ‘আমার সব সময়, সেই ছোটবেলা থেকেই চেষ্টা করি যেখানেই খেলি, বড় কিছু করার। তাই সব সময়ই অনেক বড় কিছু করার চেষ্টা করি। এ জন্যই মনে হইছে যে, আগের বছরের চেয়ে যদি এবার ভালো কিছু করতে পারি, তাহলে হয়তো ভালো হবে। এই জিনিসটাই কাজ করে। আল্লাহর রহমতে ভালো কিছু করতে পারলে ভালো জায়গা প্রস্তুত হয়ে যায়। ভালো কিছু করতে না পারলে, কোথাও জায়গা নেই।’