ইরাকের রাজধানী বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের ক্ষমতাধর জেনারেল কাসেম সোলেইমানি হত্যার পর তেহরান-ওয়াশিংটন সামরিক উত্তেজনার মধ্যেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হঠাৎ সিরিয়া সফর আসেন। সিরিয়া সফর শেষে পুতিন এখন তুরস্কে। সেখানে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি।
সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ মাধ্যম সানার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার এক ঝটিকা সফরে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে আসেন প্রেসিডিন্ট পুতিন। তিনি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সঙ্গে সিরিয়ার বর্তমান অবস্থা নিয়ে বৈঠক করা ছাড়াও দেশটিতে মোতায়েন রুশ সেনাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
সিরিয়া সফর শেষে পুতিন বুধবার তুরস্কে যান। সেখানে তিনি তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের সঙ্গে আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করা ছাড়াও ‘তুর্কিস্ট্রিম’ নামে দুই দেশের একটি যৌথ তেলপাইপ লাইন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। যৌথ ওই প্রকল্পের মাধ্যমে রাশিয়াসহ ইউরোপে তুরস্ক থেক তেল সরবরাহ করা হবে।
সানার প্রতিবেদন অনুযায়ী, সিরিয়া পৌঁছে পুতিন রাজধানী দামেস্কে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দামেস্কে রুশ বাহিনীর কমান্ড সেন্টারে দুনেতা বৈঠক করেন। গতকাল মঙ্গলবার পুতিনকে বহনকারী বিমানটি রাজধানী দামেস্কের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
রাশিয়া টুডে বলেছে, বৈঠকে দুই নেতা সামরিক কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেন। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে বলেন যে, সাদা চোখেই দেখা যাচ্ছে রাজধানী দামেস্কে শান্তিপূর্ণ জীবন যাপন চলছে।
তুর্কি সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে, এরদোয়ান ও পুতিন সিরিয়া এবং লিবিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া ইরাক ও ইরানসহ মধ্যপ্রাচ্যে যে চরম উত্তেজান তৈরি হয়েছে তা নিয়েও আলোচনা করবেন দুই নেতা। ইরানের শীর্ষ জেনারেল সোলেইমানিকে হত্যার পর মার্কিন-ইরানের মধ্যে এই উত্তেজনা।
গত ৩ জানুয়ারি ভোরে মার্কিন বিমান বাহিনী অনেকটা চোরাগোপ্তা কায়দায় ইরানের বিপ্লবী গার্ডের অভিজাত শাখা কুদস্ ফোর্সের প্রধান জেনারেল সোলেইমানির গাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করে। ওই হত্যাকাণ্ডের পর ইরানের পক্ষ থেকে ‘কঠোর প্রতিশোধের’ হুমকি দেয়া হয় যুক্তরাষ্ট্রকে।
তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার (৮ জানুয়ারি) ভোরে ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে দুই দফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। এতে অন্তত ৮০ ‘মার্কিন সন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে বলে দাবি করে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বুধবার ভোরের ওই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তাদের কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
স্থানীয় সময় ভোরে ইরাকের পশ্চিমাঞ্চলের আইন আল আসাদ এবং কুর্দিস্তানের ইরবিলের মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ইরান। হামলার পর ট্রাম্প টুইট বার্তায় বলেন, ‘সব ঠিক আছে, ইরাকে দুটি বিমানঘাঁটিতে ইরান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। এখন ক্ষয়ক্ষতি এবং হতাহতের তথ্য মূল্যায়ন করা হচ্ছে।