হংকংয়ের মিডিয়া টাইকুন জিমি লাইকে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ২০১৯ সালে গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের সময় অনুমোদনবিহীন সমাবেশে অংশ নেয়ার দায়ে শুক্রবার তাকে এই শাস্তি দেয়া হয়।
হংকংয়ের জেলা আদালতের বিচারক আমান্ডা উডকক জিমি লাইকে ১৫ মাসের কারাদণ্ড দেন। এই শাস্তি ৩ মাস কমিয়ে ১২ মাস করা হয়।
শুক্রবার এই মামলায় আদালতে যে ক’জন উপস্থিত ছিলেন, জিমি লাই তাদের মধ্যে অন্যতম। ২০১৯ সালের ওই আন্দোলনে অংশ নেয়ার অভিযোগে কিছুদিন আগে লাইকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
একই মামলায় হংকংয়ের প্রধান বিরোধী দলের নেতা মার্টিন লিকে ১১ মাসের স্থগিত কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
৭৩ বছর বয়সী জিমি লাই হংকংয়ের অ্যাপল ডেইলি পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা। এই পত্রিকাটি বেইজিংয়ের কট্টর সমালোচক। এই রায় এমন সময়ে এল যখন মূল ভূখণ্ড চীন হংকংয়ে নাগরিক অধিকার ও স্বাধীনতা ব্যাপকভাবে দমন করছে।
এ সপ্তাহের শুরুতে কারাগার থেকে পাঠানো লাইয়ের একটি হাতে লেখা চিঠি প্রকাশ করেছে অ্যাপল ডেইলি। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘সাংবাদিক হিসেবে বিচার দাবি করা আমাদের দায়িত্ব। যতক্ষণ না আমরা অন্যায় প্রলোভনে অন্ধ হয়ে না থাকি, যতক্ষণ না আমরা মন্দকে আমাদের মধ্যে চালিত হতে না দেই, আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করছি।’
জিমি লাই চীনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। শিশু অবস্থায় তাকে হংকংয়ে পাচার করা হয়।
বিচারের শুনানির আগে বিবিসির সঙ্গে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে লাই বলেন, তাকে কারাগারে রাখা হলেও তিনি ‘জীবন অর্থপূর্ণ ভাবে যাপন করবেন’।
তিনি বলেন, ‘আমি এখানে এক ডলার নিয়ে হাজির হয়েছিলাম। আমি এই জায়গার কারণে সব কিছু পেয়েছি। এখন যদি পরিশোধের সময় হয় তাহলে এটা আমার মুক্তি।’
লাইয়ের বিরুদ্ধে মোট আটটি অভিযোগ আনা হয়েছে, এর মধ্যে দুটি অভিযোগ হংকংয়ে নতুন কার্যকর হওয়া জাতীয় নিরাপত্তা আইনের আওতায়। এর শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
গত বছর চীন হংকংয়ে এই আইন কার্যকর করে। এতে বিচ্ছিন্নবাদ ও সরকারের কর্তৃত্ব না মানাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এ মাসের শুরুতে, মূল ভূখণ্ডের প্রতি আরও আনুগত্য নিশ্চিত করতে বেইজিং এ অঞ্চলের নির্বাচনী বিধিগুলো সংস্কার করেছে।
সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি