‘সৎ পথে ফিরতে স্বেচ্ছায় কারাগারে যাই’

:
: ২ years ago

‘আমি মাদক সেবন করতাম। এটা-সেটা চুরি করতাম। এজন্য আমাকে ধরে মারধর করা হতো। মাদক ছেড়ে সৎ পথে ফিরতেই স্বেচ্ছায় কারাগারে যাই।’

মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এ হাজির করা হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বড় সোহাগের হয়ে স্বেচ্ছায় কারাভোগ করা মো. হোসেনকে। আদালতে সাংবাদিকদের উল্লিখিত কথাগুলো বলে মো. হোসেন। বড় সোহাগের মামাতো ভাই মো. হোসেন।

মো. হোসেন জানিয়েছে, কক্সবাজারের রামু থানার বৌদ্ধমন্দির এলাকায় তার বাড়ি। মা-বাবা, ভাই-বোন সবাই মারা গেছে। ভবঘুরে ছিল সে। কখনো রংমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করত, কখনো গাড়ি চালাত। এ সময় মাদকে আসক্ত হয় ৪৫ বছর বয়সী হোসেন। মাদকের টাকা জোগাড় করতে চুরি করত সে।

হুমায়ুন কবির টিটু হত্যা মামলায় বড় সোহাগসহ আসামি ছিল ছয়জন। তাদের সঙ্গে আদালতে যেত মো. হোসেন। ২০১৭ সালে বড় সোহাগসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। তিন আসামি খালাস পান। খালাস পাওয়া তিন আসামির কাছে জানা যায়, বড় সোহাগের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। পরের বছর স্বেচ্ছায় আদালতে এসে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করে মো. হোসেন। সেদিন সে আদালতে ‘বড় সোহাগ’ হিসেবে পরিচয় দেয়। ওই দিন আদালত জামিন না দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

 

চার বছর অন্যের হয়ে জেল খাটা মো. হোসেন এখন স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চায়। সে বলে, ‘চার বছর জেল খেটেছি। কেউ খোঁজ-খবন নেয়নি। এখন আমি মাদক সেবন করি না। মুক্তি পেলে জেলখানা থেকে বের হয়ে কাজ করে খাব। কোনো অপরাধ করব না।’

ফেঁসে যাচ্ছেন দুই আইনজীবী:
সহজেই মুক্তি মিলছে না মো. হোসেনের। প্রতারণার আশ্রয় নেওয়ায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক জেসমিন আরা বেগম মো. হোসেন, বড় সোহাগ, দুই আইনজীবী শরীফ শাহরিয়ার সিরাজী ও ইব্রাহিম হোসেনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে (সিএমএম) আদেশ দিয়েছেন। মো. হোসেনকে কোতয়ালী থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে।

এদিকে, মো. হোসেন, বড় সোহাগ ও দুই আইনজীবী শরীফ শাহরিয়ার সিরাজী ও ইব্রাহিম হোসেনের বিরুদ্ধে কোতয়ালী থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

উল্লিখিত চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারাসহ অজ্ঞাত আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে পূর্বপরিকল্পিতভাবে একজনের বদলে আরেকজনকে কারাভোগ করিয়ে আদালতের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।