স্যাটেলাইট চিত্রে বালাকোটে ভারতের হামলার প্রমাণ মেলেনি

:
: ৫ years ago

পাকিস্তানে ভারতের বিমান বাহিনীর অভিযান নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযান নিয়ে ফের প্রশ্নের মুখে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। অভিযানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে এবার প্রশ্ন তুলেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। এর নেপথ্যে রয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থার পাঠানো উপগ্রহের তোলা কিছু ছবি। তাতে ভারতীয় বিমান বাহিনীর হামলায় জয়শ-ই-মোহাম্মদের প্রশিক্ষণ শিবিরে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে দেখা গেছে। এদিকে বিবিসি’র এক অনুসন্ধানেও জঙ্গি হতাহত নিয়ে ভারতের দাবি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। তবে ভারতের বিমান বাহিনী হামলার একটি প্রমাণপত্র সরকারের হাতে তুলে দিয়েছে।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয়ে হামলা চালায় জয়শ’। জবাবে ২৬ ফেব্রুয়ারি নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তানে ঢোকে ভারতীয় বিমান বাহিনী। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মির, বালাকোট এবং চাকোটিতে বোমা ফেলে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ শিবির ধ্বংস করে দেওয়া হয়। পরে বিমান বাহিনী এবং ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিজয় গোখেল তা নিশ্চিত করেন। উত্তর-পূর্ব পাকিস্তানের বালাকোটের জাবা গ্রামে জয়শ’র ঘাঁটিতে বোমা ফেলা হয়েছে বলে জানান তারা। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গত ৪ মার্চ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে নিজেদের একটি উপগ্রহ পাঠায় যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর প্ল্যানেট ল্যাবস আইএনসি সংস্থা। হাই রেজলিউশন যুক্ত ক্যামেরা বসানো ওই উপগ্রহ আকাশ থেকে মাটিতে থাকা ২৮ ইঞ্চি আয়তন বিশিষ্ট যে কোনো বস্তুর সুস্পষ্ট ছবি তুলতে সক্ষম। সেই উপগ্রহের পাঠানো বেশ কিছু ছবির নাগাল পেয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সেগুলো পর্যবেক্ষণ করে তারা জানিয়েছে, ছবিতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি ধরা পড়েনি। বালাকোটের জাবা গ্রামে জয়শ’র জঙ্গিঘাঁটি দিব্য মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। অক্ষত আছে জয়শ’ চালিত মাদ্রাসাসহ মোট ছ’টি বাড়ি। তবে শেষবার ওই এলাকায় কিছু তাবু দেখা গিয়েছিল। সেগুলির হদিশ নেই। হয় সেগুলি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অথবা বায়ুসেনার অভিযানেই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। তবে ভারত সরকার যে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলে ধরছিল তার প্রমাণ মেলেনি বলে তাদের দাবি। এই বিতর্কের মধ্যেই সরকারের হাতে সরাসরি প্রমাণ তুলে দিয়েছে ভারতের বিমান বাহিনী। উপগগ্র চিত্র দিয়ে ওই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ওই দিন ৮০ ভাগ বোমাই নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হেনেছে।

বিবিসি’র ফ্যাক্টচেক অনুসন্ধান

হোয়াটসঅ্যাপের কথিত একটি চ্যাট সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে যেখানে দাবি করা হচ্ছে বালাকোটে ভারতীয় বিমান বাহিনীর হামলায় ২৯২ জন জঙ্গি মারা গেছে। কথিত কথোপকথনের যে স্ক্রিনশট সামাজিক মাধ্যমে যারা শেয়ার করেছে তারা দাবি করেছে যে এই কথোপকথন হয়েছে একজন ভারতীয় এবং তার বন্ধু বলে কথিত ব্যক্তি ড: ইজাজের মধ্যে। ড: ইজাজ থাকেন পাকিস্তানের বালাকোটে। কাজ করেন বালাকোটের মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিমান হামলার সময় তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। ওই কথোপকথনে তিনি নিহতের সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু ওই মেসেজ কার্যত ভুয়া। কারণ বিবিসি’র অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বালাকোটে কোন মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ই নেই।