করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশে ২০২১ সালে অমর একুশে গ্রন্থমেলা ভার্চুয়ালি বা অনলাইনে করার জল্পনা ছিল। শেষ পর্যন্ত ঠিক হয়েছে, ১৮ মার্চ শুরু হচ্ছে মেলা। এবারের বইমেলায় যারা আসবেন তাদের অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসতে হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) কৃষ্ণ পদ রায়।
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) বইমেলার অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, এবারের বইমেলায় প্রকাশকদের ওপর হামলার কোনো হুমকি নেই। তবে বিষয়টা আমাদের মাথায় রয়েছে। সেটা মাথায় রেখেই আমাদের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। মানুষের অনুভূতিতে আঘাত দেয় এমন বই প্রকাশ হচ্ছে কি-না সেটাও আমরা খোঁজ রাখছি।
তিনি বলেন, যেহেতু করোনা মহামারির মধ্যে এবারের বইমেলা শুরু হচ্ছে সেহেতু মাস্ক পরে বইমেলায় প্রবেশ করতে হবে। প্রতিটি গেটে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সবাইকে মেলার আসার আহ্বান জানান তিনি।
ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা একটি ভিন্ন সময়ে বইমেলা শুরু করছি। করোনা পরিস্থিতি মাথায় রেখেই প্রতিবছর আমাদের যে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবারও একই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রবেশ গেট আমরা চিহ্নিত করেছি। এবার একটি অতিরিক্ত প্রবেশ পথ যুক্ত করেছি, যেটি ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অথবা শিখা চিরন্তন গেট দিয়ে প্রবেশ করা যাবে। আপনারা জানেন, রাস্তা-ঘাটে উন্নয়নমূলক কাজ চলছে এজন্য অতিরিক্ত গেট রাখা হয়েছে। এবার কিছু কিছু নিরাপত্তা স্ট্রাকচার পরিবর্তন করা হয়েছে। আমাদের মোবাইল পেট্রল থাকবে, ফুট পেট্রল থাকবে। যারা বইমেলায় আসবেন কেবল তারাই ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের গেট দিয়ে প্রবেশ করবেন।
তিনি বলেন, অতীতের ঘটনা মাথায় রেখেই আমরা গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করেছি। কেউ অপরাধমূলক কাজ করছে কি-না সে ব্যাপারে আমরা নজরদারি করছি। যথাসময়ে তথ্য পেলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, এবারের বইমেলায় প্রধানত তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। সাদা পোশাকে একটি ব্যবস্থাপনা থাকবে; সিসিটিভি, আর্চওয়ে থাকবে; গোয়েন্দা সংস্থা ও ডিবির টিম থাকবে। প্রতিটি প্রবেশ পথে আর্চওয়ে থাকে, নির্দিষ্ট প্রবেশ পথ থাকে, নির্দিষ্ট বাহির হওয়ার পথ থাকে। যারা বইমেলায় আসেন তারা প্রবেশ পথে আমাদের সহযোগিতা করে থাকেন। সবার স্বার্থেই এই নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
ডিএমপির এই অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, আমরা বাংলা একাডেমির সঙ্গে কথা বলেছি। মেলা সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একটি ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পার্কিংয়ের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। তবে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মাঝের রাস্তা পথচারীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বিশেষ কোনো পরিস্থিতি ছাড়া এ পথে গাড়ি প্রবেশ করবে না। কোভিডের কারণে একটি বিশেষ ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে।