করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার কঠোর অবস্থানে থাকলেও এর প্রভাব পড়েনি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটায়।
স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ নীতি চালু করলেও তা সবক্ষেত্রে উপেক্ষিত। কুয়াকাটায় যাওয়া পর্যটক, পর্যটননির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয়দের কেউই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি।
কারও মাঝেই সংক্রমণ ভীতি দেখা যায়নি। এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগ কিংবা ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকেও কোনো ধরনের সচেতনতামূলক প্রচারণা চোখে পড়েনি।
প্রসঙ্গত, বছরের এই সময়ে কুয়াকাটায় পর্যটকদের সংখ্যা বেশি থাকে। এবার করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও সেখানে পর্যটকদের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য।
তবে স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্কের ব্যবহার উপেক্ষা করেই তারা ঘুরে বেড়ান। এমনকি আবাসিক হোটেলগুলোতেও নামমাত্র স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকদের সেবা দেয়া হচ্ছে। ঘুরে দেখা গেছে, পর্যটননির্ভর ব্যবসায়ীরাও মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি।
দোকানপাট মাছের বাজারসহ স্থানীয়দের কেউই ব্যবহার করছে না মাস্ক। কদাচিৎ মাস্কের ব্যবহার দেখা গেলেও সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি সেভাবে মানা হচ্ছে না।
মাছের দোকানগুলোতে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে কেনাকাটা করছেন পর্যটকরা। কোনো কোনো দোকানির মুখে মাস্ক দেখা গেলেও বেশিরভাগই মাস্ক-গ্লাভস ব্যবহার করছেন না।
শামুক, ঝিনুক ও রাখাইন মার্কেটের অবস্থা আরও ভয়াবহ। ছোটখাটো বাজার ও চায়ের দোকানগুলোয় কেউ মাস্ক পরছেন না বললেই চলে।
সৈকতের পেশাদার ফটোগ্রাফার ও বাইকারদের মাঝেও নেই সচেতনতা। এসব দেখে রাজধানী থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক নুরে আলম আজাদ হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ‘দেখে মনে হয় না বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আছে।
আরেক পর্যটক সিফাত বলেন, ‘ফ্রাইপল্লীতে যেভাবে বেচাকেনা চলছে তাতে করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকা দুষ্কর। এভাবে চলতে থাকলে শীতে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।
এ ব্যাপারে কুয়াকাটা প্রেস ক্লাব সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব বলেন, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের নির্দেশনা থাকলেও কুয়াকাটায় আগত পর্যটকসহ স্থানীয়রা তা উপেক্ষা করছেন। পর্যটনকেন্দ্রে বিষয়টি যেভাবে গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমএ মোতালেব শরীফ বলেন, ‘আমরা আবাসিক হোটেলে স্বাস্থ্যবিধি মানার তাগিদ দিয়েই পর্যটকদের রাখছি।
আমরা যদি নিজের এবং পরিবারের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে একটু সচেতন হই তাহলে কিছুটা হলেও এই মহামারি থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারবো। আমাদের ব্যক্তি সচেতনতা সবার আগে।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান দাবি করেন, কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ এক ঘণ্টা পর পর মাইকিং করে পর্যটকদের সচেতন করছে। আমরা যথেষ্ট চেষ্টা করছি।
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হাসনাত মোহাম্মাদ শহিদুল হক বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা আছে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। যারা উপেক্ষা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।