ঢাকা:২৫ জুন ২০২০, বৃহস্পতিবার: করোনা মহামারীর এই দুর্যোগে বিপর্যস্ত জনগণের উপর লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধির পায়তারা বন্ধের দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
আজ ২৫ জুন গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই দাবি জানিয়ে বলেন, দীর্ঘ সাধারণ ছুটি ও সীমিত আকারে জরুরী সেবাদানকারী অফিস খোলা রাখায় করোনা মহামারীতে কর্মহারিয়ে নিধারুণ আর্থিক সংকটে থাকা জনগনের উপর বর্ধিত লঞ্চ ভাড়া চাপিয়ে দেয়া হলে “মরার উপর খাড়ার গাঁ” এ পরিণত হবে যা দরিদ্র-পিরিত জনগণের উপর এই মহাসংকটে জুলুমের শামিল হবে।
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, যেকোন সংকটে বা অজুহাতে দেশে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ালে তা স্বাভাবিক সময়েও কমানোর সক্ষমতা সরকারের নেই। দেশের ইতিহাসে দীর্ঘ ছুটিতে থাকা ও সীমিত আকারে জরুরী সেবাদানকারী অফিস খোলা রাখায় করোনা মহামারীতে কর্মহারিয়ে সাধারণ মানুষজন এখন এক ভয়াবহ আর্থিক সংকটে পতিত। জনগনের জীবন-জীবিকা আজ ভয়াবহ অনিশ্চয়তায় পতিত। দিশেহারা সাধারণ গরীব মানুষজন তার শেষ সম্বলটুকু দিয়ে কোন রকমে বেচেঁ থাকার জন্য সংগ্রাম করছে। কর্ম না থাকায় প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভাগীয় শহরগুলো থেকে গ্রামে ছুটছে। ইতিমধ্যে বাসের ভাড়া এক লাফে ৬০ শতাংশ বৃদ্ধির ফলে গণপরিবহনগুলো চরম যাত্রী সংকটে পড়েছে। লঞ্চে এখনও স্বাস্থ্যবিধি না মেনে প্রায় প্রতিটি রুটে গাদাগাদি করে যাত্রী বহন অব্যাহত রয়েছে। পৃথিবীর ২০৫টি দেশ ও অঞ্চলে করোনার ভয়াল থাবায় বিপর্যস্ত হলেও কোন দেশে গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ানো নজির নেই। আমাদের পাশের দেশ ভারতেও বাস-লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধির জন্য মালিকদের পাতানো ফাঁদে পা না দিয়ে সে দেশের সরকার কঠোরতম অবস্থান নেওয়ার কারণে কোন পরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি হয়নি। তাই এসব দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে স্বাস্থ্যবিধির অজুহাতে লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধির পায়তারা জরুরী ভিত্তিতে বন্ধের দাবী জানান তিনি। একই সাথে এই সংকটকালে লঞ্চ ও ফেরিঘাটে টোল-ইজারা বন্ধ রাখার দাবি জানান যাত্রী অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলনকারী এই নেতা।
বিবৃতিতে আরো দাবী করা হয়, বিশ্ববাজারে বহু আগেই তেলের দাম কমেছে। লঞ্চ পরিচালনার ক্ষেত্রে একমাত্র উপকরণ জ্বালানী তেলের মূল্য কমানো হলে ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে গড় বোঝাইয়ের অর্ধেক যাত্রী নিয়েও লাভজনকভাবে যাতায়াত করা সম্ভব। তাই করোনা সংকটকালে গণপরিবহনের জন্য জ্বালানী তেল আমদানী মূল্যে সরবরাহ করে লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধির পায়তারা বন্ধের পাশাপাশি বাসের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করে রাষ্ট্র ও সরকারকে দুর্যোগ কবলিত বিপর্যস্ত সাধারণ জনগণের পাশে দাড়াঁনোর অনুরোধ জানান তিনি।