স্বামী-সন্তানের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত রেখা

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে নিহত রেখা বেগমের (৩৫) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (১ মার্চ) বাদ মাগরিব উপজেলার শরীফপুর ঈদগাহ ময়দান সংলগ্ন কবরস্থানে স্বামী, দুই ছেলে ও মেয়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়েছে।

রেখার চাচা শ্বশুর ও উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শরীফ হোসাইন জানান, সোমবার রাতে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রেখা মারা যান। ঢাকায় ময়নাতদন্তের পর আজ বিকেলে আশুগঞ্জ শহরের শরীয়ত নগরে তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল মাতৃছায়া কিন্টারগার্টেনে আনা হয় মরদেহ। পরে সন্ধ্যা ৬টায় মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় শরিফপুর কান্দাপাড়ায় স্বামী মকবুল হোসেনের বাড়িতে। সেখানে ১৫ মিনিট মরদেহ রাখার পর সন্ধ্যায় জানাজার জন্য নেওয়া হয় স্থানীয় ঈদগাহ মাঠে।

তিনি আরও জানান, জানাজায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন, আইন সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান আনসারী, আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবু নাছের আহমেদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অংশ নেন। ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিচার দাবি করেন জানাজায় অংশ নেওয়া উপস্থিত লোকজন। পরে বাদ মাগরিব শরীফপুর কবরস্থানে স্বামী ও তিন সন্তানদের কবরের পাশেই দাফন করা হয় রেখাকে।

পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৩ বছরে আগে জেলার নবীনগরের রেখা বেগমকে বিয়ে করেন আশুগঞ্জ উপজেলার শরীফপুরের সফর মিয়ার ছেলে মকবুল মিয়া। মকবুল ছিলেন সাবেক ইউপি সদস্য ও ইউপি স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি। পেশায় ছিলেন একজন সহকারী শিক্ষক। বিয়ের পর তাদের সংসারে দুই ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। মকবুল দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে উপজেলা সদরে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।

গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ মকবুলের বাসায় বিস্ফোরণের বিকট শব্দ হয়। এতে মকবুল মিয়া, মকবুলের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রেখা, বড় ছেলে জয় ও ছোট ছেলে জুবায়ের অগ্নিদগ্ধ হয়। তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকায় নেওয়ার পথে মকবুলের ছোট ছেলে জুবায়ের মারা যায়।

ঘটনার পরদিন বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মকবুল মিয়া মারা যান। স্বামী মারা যাওয়ার একদিন পর গত বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীতে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অগ্নিদগ্ধ রেখা একটি মৃত কন্যা সন্তান প্রসব করেন। এরপর গত রোববার চিকিৎসাধীন মারা যায় মকবুলের বড় ছেলে জয়। সর্বশেষ সোমবার রাত ১১টার দিকে রেখা বেগমও মারা যান।