স্বাধীনতার মাসে নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতি বাংলাদেশের মানুষ মেনে নিবে না : পীর সাহেব চরমোনাই

:
: ৪ years ago

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, নরেন্দ্র মোদির হাতে বারবার মুসলমানদের রক্তের দাগ লেগেছে। তার প্রশ্রয়ে দিল্লিতে হিন্দুত্ব বাদী সাম্প্রদায়িক উন্মাদনায় মুসলমানদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত গণহত্যা চালানো হয়েছে।

 

এমন একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে স্বাধীনতার মাসে মুজিব বর্ষে আমন্ত্রণ জানানো একদিকে যেমন মুজিব বর্ষকে কলঙ্কিত করা হবে, অন্যদিকে স্বাধীনতার চেতনাকে ভূলন্ঠিত করে গোটা জাতিকে অপমান করা হবে। বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেবে না। আমরা তাঁর আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, আমরা মুজিব বর্ষের বিরোধিতা করছি না। আমরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, ব্যক্তি নরেদ্র মোদির বিরোধিতা করছি।

 

পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ভারতে রাষ্ট্রীয়ভাবে মুসলমানদের নির্মূল করার অপচেষ্টা চলছে। সিএএ, এনআরসি এসবের মূল উদ্দেশ্য ভারতকে মুসলিম শূন্য করা। ধর্মনিরপেক্ষতার দাবীদার ভারত একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকে যেভাবে গণহত্যা চালিয়ে মুসলমানদের নির্মূল করতে চায়, তা আমাদেরকে হালাকুখান, চেঙ্গিসখাঁন ও হিটলারের নৃশংসতার কথা স্বরণ করিয়ে দেয়।

 

বিজেপি ভারতকে দ্বিতীয় স্পেন বানাতে চায়। তাদের মনে রাখা উচিত, ইংরেজদের দুইশ বছরের সর্বগ্রাসী নির্যাতন স্বত্বেও ভারত থেকে মুসলমানদের নির্মূল করা যায়নি। বরং তারাই বিতাড়িত হয়েছে।

পীর সাহেব চরমোনাই আরো বলেন, ইসলাম সম্প্রদায় সম্প্রীতির ধর্ম দিল্লির এই উন্মত্ততার মাঝেও মুসলমানেরা হিন্দুদের মন্দির পাহারা দিয়েছে। এর চেয়ে সম্প্রদায় সম্প্রীতির নজির আর কি হতে পারে!

 

পীর সাহেব চরমোনাই ভারতের মুসলিম নির্যাতন ও গণহত্যার প্রতিকারে জাতিসংঘ, ওআইসি ও মুসলিম বিশ^সহ আন্তর্জাতিক মহলকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি আজ ৪ মার্চ ২০২০ইং বুধবার বিকাল ৪টায় বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে ভারতে মুসলিম নির্যাতন, গণহত্যা, পবিত্র মসজিদে অগ্নিসংযোগ এবং নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

 

আন্দোলন নগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাও: ইউনুছ আহমাদ, রাজনৈতিক উপদেষ্টা আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাও: গাজী আতাউর রহমান, সহকারী মহাসচিব আলহাজ¦ আমিনুল ইসলাম, নগর দক্ষিণ সভাপতি মাও: ইমতিয়াজ আলম, প্রচার সম্পাদক মাও: আহমাদ আব্দুল কাইয়ুম, মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, যুব নেতা কেএম আতিকুর রহমান, ছাত্র নেতা আবদুজ্জাহের আরেফী প্রমুখ।

 

মাওলানা মাদানী বলেন, দিল্লির দাঙ্গার সময় পুলিশের কাছে ১৩ হাজারের অধিক ফোন কল গেলেও পুলিশ নিরব দর্শক ছিলো। পুলিশি অপদার্থতার নজির বিশ্ব দেখলো। আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা জনগণকে নয়, ভারতকে সস্তুষ্ট করতে ব্যস্ত। ভারতের সাথে সরকারের সম্পর্ক বন্ধূত্ব ও সমতামূলক নয়, বরং অধিনতা ও দাসত্বমূলক।

 

সীমান্ত হত্যা নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রসচিবের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে দলের মহাসচিব বলেন, বিএসএফ এর নির্বিচার হত্যাকা-ের কারণেই ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত বিশে^র সবচেয়ে প্রাণঘাতী সীমান্ত।

 

বিএসএফই আমাদেরকে ফেলানীর লাশ উপহার দিয়েছে।
বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, নগর দক্ষিণ সহ-সভাপতি আলহাজ¦ আবদুর রহমান, আলহাজ¦ আলতাফ হুসাইন, উত্তর সহ-সভাপতি আলহাজ¦ আনোয়ার হুসাইন, দক্ষিণ সেক্রেটারী মাও: এবিএম জাকারিয়া, উত্তর সেক্রেটারী মাও: আরিফুল ইসলাম প্রমূখ। সমাবেশ শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা বিশাল মিছিল বের করেন।