বরিশাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে এসেছেন ফাতেমা বেগম। সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে চাকরি করতেন তার বাবা মো. ফারুক (৫০)। সর্বশেষ বাবার সঙ্গে কথে হয়েছে গতকাল সন্ধ্যা ৭টায়।
ডিপোতে বিস্ফোরণের খবর পেয়েই পিতার খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। তবে এখনো কোনো হদিস মেলেনি মো. ফারুকের। চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তাই আহাজারিতে ভেঙে পড়েন ফাতেমা।
একই স্থানে ছোট ভাই মো. মনিরের (৩২) খোঁজে এসেছেন চট্টগ্রামেরই বাসিন্দা আব্দুল করিম। মো. মনির বিএম কনটেইনার ডিপোতে কাজ করতেন এফএলটি অপারেটর হিসেবে।
গতকাল রাতেও গর্ভবতী স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন মো. মনির। চমেক হাসপাতালের সব ইউনিট খুঁজেও ছোট ভাইয়ের সন্ধান পাননি বড় ভাই আব্দুল করিম। খোঁজ পেতে তাই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
নুরুল কাদের চাকরি করতেন ডিপোর ওয়ার্কশপ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। চাচাতো ভাই মনির হোসেন সারা হাসপাতাল চষে ফেলেছেন নুরুল কাদেরের খোঁজে। মেলেনি তার খোঁজও।
আব্দুস সুবহান (৩১) কন্টেইনার ডিপোর আইসিটি সুপারভাইজার হিসেবে চাকরিরত ২০১৩ সাল থেকে। মিলছে না তার খোঁজও। তাই চাচাতো ভাইয়েরা সন্ধান করে চলেছেন আব্দুস সুবহানের।
এ রকমভাবে স্বজনের খোঁজে এসেছেন আরও অনেকে। খোঁজ না পেয়ে ভেঙে পড়ছেন কান্নায়। বর্তমানে একটাই চাওয়া তাদের, প্রিয়জনকে ফিরে পাওয়া।
এদিকে, বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুনের পর ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জন হয়েছে। তাদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী রয়েছেন পাঁচজন। আগুনে আহত হয়েছেন আরও চার শতাধিক। তাদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিক, স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও রয়েছেন।
বিএম কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। সেখানে একের পর এক কনটেইনার বিস্ফোরণ হচ্ছে। দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুনের লেলিহান শিখা। নিরাপদ দূরত্বে থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণের সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা।
বর্তমানে কাজ করছেন চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও ফেনীর মোট ২৫টি ইউনিটের কর্মীরা। রোববার (৫ জুন) বিএম কনটেইনার ডিপোতে সরেজমিন এমন চিত্র দেখা গেছে