‘স্পিনাররা কেউ বল ছাড়তে চায় না’

:
: ৭ মাস আগে

টেস্ট জিততে প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট নেওয়ার বিকল্প নেই। দুই ইনিংসে দুইবার অলআউট না করলে ম্যাচে জয় পাওয়া অসম্ভব। সিলেটে নিউ জিল্যান্ডকে দুইবার অলআউট করায় বাংলাদেশ পেয়েছেন সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ঊনিশতম জয়। স্পিনারদের হাত ধরেই এসেছে এই জয়।

 

স্পিন আক্রমণকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। ম্যাচের ২০ উইকেটের ১০টিই তাইজুলের পকেটে। স্পিন বিষে নীল করে নিউ জিল্যান্ডকে এলোমেলো করেছেন তিনি। দুই অফস্পিনার নাঈম হাসান ৩টি এবং মিরাজের পকেটে গেছে ২ উইকেট। এছাড়া পার্ট টাইম স্পিনার মুমিনুল হক পেয়েছেন ৩ উইকেট। বাকি ২ উইকেট পেয়েছেন পেসার শরিফুল ইসলাম।

স্পিনাররা ঠিকঠাক দায়িত্ব পালন করায় বেশ খুশি অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। কম্বিনেশনের কারণ এক পেসার নিয়ে মাঠে নামলেও স্পিনাররা অক্লান্ত পরিশ্রম করে ম্যাচ জিতিয়েছেন বলেই মত দিলেন অধিনায়ক। এই স্পিন ত্রয়ীদের মধ্যে সেরা ছিলেন তাইজুল। ১০ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হওয়া তাইজুল অভিজ্ঞতায় শান্তর চেয়ে এগিয়ে।

 

তরুণ অধিনায়ক হিসেবে তাইজুলকে পরিচালনা করা কতটা কঠিন বা সহজ ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। উত্তরে শান্ত বলেছেন, ‘আমার কাছে মনে হয় তাইজুল (ভাই) অন্যতম সেরা বোলার বেশ কয়েক বছর ধরে টেস্ট ফরম্যাটে। উনার সব থেকে বড় স্টেন্থ লম্বা সময় একই জায়গায় বল করতে পারে। ওই বিশ্বাসটা আমার ছিল।’

‘ওটাই আমি কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। আপনি যদি খেয়াল করে দেখেন অনেক লম্বা সময় ধরে একপাশে থেকে বল করে গেছে। ও রকম আলাদা কোনো পরিকল্পনা আমি দেইনি। উনিও করেননি।  উনার যেটা পরিকল্পনা ছিল এক জায়গায় কীভাবে লম্বা সময় এক জায়গায় বল করা যায়।’-আরও যোগ করেন শান্ত।

 

এই ম্যাচে বাংলাদেশ এক পেসার ও তিন স্পিনার নিয়ে নেমেছিল। পেসার শরিফুল ইসলামের সঙ্গে হাত ঘুরিয়েছেন তাইজুল, নাঈম ও মিরাজ। স্পিনাররা কাজটা সহজ করে দিলেও পেসার শরিফুল ২ উইকেট নিয়ে রেখেছেন অবদান। সিলেটের যে উইকেট ছিল সেখানে এই কম্বিনেশনই ঠিক ছিল বলে মন্তব্য করেছেন অধিনায়ক।

শান্ত জানিয়ে রাখলেন, চার বোলাররা নিয়ে নামলেও স্পিনারাররা তার কাজ সহজ করে দিয়েছে, ‘এই ম্যাচের জন্য ভালো কম্বিনেশন ছিল। উইকেটে ব্যাটিং করা সহজ ছিল বলবো না। এজন্য ওই কম্বিনেশন নিয়ে খুশি ছিলাম। যে জিনিসটা আমাদের জন্য খুব ভালো তা হলো, মিরাজ, তাইজুল ভাই ও নাঈম লম্বা সময় ধরে বোলিং করতে পারে। বলই ছাড়তে চায় না। স্বাভাবকিভাবে আমার জন্য কাজটা অনেক সময় হয়ে যায়।’

মুমিনুল হকের নেতৃত্বকালীন সময়ে দল কাঙ্খিত ফল না পেলেও সামগ্রিক কিছুর পরিবর্তন হয়েছিল। পেসারদের ব্যাক করার, নিয়মিত খেলানো এবং একাধিক পেসার নিয়ে মাঠে নামার চর্চা মুমিনুল করেছিলেন। যার ফল বাংলাদেশ ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতেও পেয়েছিল। পেসার পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া, সহজেই আস্থা না হারানোর কাজটাও তিনি করেছিলেন।

 

তবে ফল দিয়েই সাফল্য বিচার করা হয় বলে মুমিনুলকেও কাটা পড়তে হয়। শান্ত নিজের প্রথম ম্যাচেই এক পেসার নিয়ে নেমেছেন। সফল হয়েছেন। সামনে পেসাররা পর্যাপ্ত সুযোগ পাবে কিনা তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে গেছে। তবে শান্ত এখনই সেসব নিয়ে ভাবতে নারাজ। তার ভাবনায় রয়েছে কেবল দলের পরিকল্পনা ও কন্ডিশন।

নতুন অধিনায়কের ভাষায়, ‘নির্ভর করে (টিম কম্বিনেশন)। আমরা যদি ভিন্ন দলের বিপক্ষে খেলতাম, ভিন্ন কন্ডিশনে খেলতাম তাহলে হয়তো পেস বোলার বেশি থাকত। আরেকটা জিনিস, আমরা যখন স্পিনার বেশি খেলাই তখন এই প্রশ্নটা আসে। কিন্তু যখন পেস বোলার বেশি খেলাই স্পিনার কম খেলাই তখন এই প্রশ্নটা আসে না। তাইজুল, মিরাজ বা নাঈমকে কেন খেলাচ্ছি না। পেসার হোক বা স্পিনার সবাই বোলার। তাদের খেলা নির্ভর করে কোন পরিস্থিতিতে, কোন কন্ডিশনে, কোন বোলাররা আমাকে কাজে দেবে। সেই অনুযায়ী দল বাছাই হয়।’