বগুড়ায় আবাসিক হোটেলে নিয়ে ছেলে আবদুল্লাহ হেল রাফি ও স্ত্রী আশা মনিকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় স্বামী আজিজুল হক ও শ্বশুর হামিদুল হকের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২-৩ জনকে আসামি করা মামলা হয়েছে।
রোববার (২ জুন) রাতে নিহত আশা মনির বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলার এজাহারে, পারিবারিক কলহ এবং যৌতুকের টাকা লেনদেনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
হত্যার কারণ সম্পর্কে আশা মনির খালা মাফিয়া অভিযোগ করে বলেছেন, ‘বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য আশা মনিকে চাপ দিচ্ছিল আজিজুল। এ পর্যন্ত ৫ লাখ টাকা যৌতুক দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আজিজুল আরও এক লাখ টাকা দাবি করে আসছিলেন। ওই টাকা না পাওয়ার কারণেই আশা মনি ও তার শিশু সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে।’
আশা মনির বাবা ও মামলার বাদী আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘যৌতুকের জন্য আমার মেয়ে ও নাতিকে হত্যা করেছে আজিজুল। তার ফাঁসি চাই।’
শাজাহানপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসান হাফিজুর রহমান বলেন, ‘মামলার দুই আসামি গ্রেপ্তার রয়েছেন। এর মধ্যে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুল স্ত্রী-সন্তানকে গলা কেটে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।’
‘আজিজুল জানিয়েছেন, রাফিকে হত্যার পর মাথা কেটে করতোয়া নদীতে ফেলে দিয়েছেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে এখনও মাথার সন্ধান মেলেনি। নদীতে অভিযান চলছে।’ – যোগ করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এর আগে, রোববার বেলা ১২টার দিকে বগুড়া শহরের বনানী এলাকার শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেল থেকে আশা মনি ও তার ছেলে আবদুল্লাহ হেল রাফির গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সে সময় রাফির মাথা পাওয়া যায়নি।
আজিজুল হক বগুড়ার ধুনট উপজেলার হেউট গ্রামের হামিদুল ইসলামের ছেলে। আশা মনি নারুলী এলাকার আসাদুল ইসলামের মেয়ে।
আশা মনির স্বজনরা জানান, প্রায় তিন বছর আগে আজিজুলের সঙ্গে আশা মনির বিয়ে হয়। ১১ মাস আগে রাফির জন্মের পর থেকে আশা মনি তার বাবার বাড়িতে থাকতেন। আজিজুল চট্টগ্রামে চাকরি করেন। তিনি দুই মাস আগে ছুটিতে বাড়িতে আসেন। শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম যাওয়ার কথা ছিল তার।
পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেলের একটি কক্ষ ভাড়া নেন আজিজুল। সেদিন তমা ও মিরাজ পরিচয়ে হোটেলে উঠেন তারা। বাড়ি উল্লেখ করা হয় রংপুরের পীরগঞ্জ। পরদিন সকালে সেই হোটেল থেকে আশা মনি ও তার ছেলের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়।