স্ত্রীর সন্ধান পেতে বান্ধবীর সন্তান অপহরণ

:
: ২ years ago

সাভারের আশুলিয়া থেকে অপহৃত শিশুকে ৩ মাস পর উদ্ধার করেছে র‍্যাব-৪। এসময় অপহরণকারীসহ আরেকজনকে আটক করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩১ মে) দুপুরের দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে, রংপুর থেকে ওই অপহরণকারীকে আটক ও তার দেওয়া তথ্যে গাজীপুর থেকে অপহৃত শিশুকে উদ্ধার করা হয়।

এসময় অপহরণকারী রংপুর জেলার মো. রাশেদুল ইসলামকে (৩০) রংপুর থেকে ও রোকসানা বেগমকে (৩৫) গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার রতনপুর এলাকা থেকে আটক করা হয়।

গত ৩১ মার্চ আশুলিয়ার শিমুলিয়ার টেঙ্গুরী এলাকা থেকে আঁখি নামে দেড় বছরের ওই শিশুকে অপহরণ করে অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবক।

উদ্ধার শিশু আঁখি টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী থানার পাইক্কা গ্রামের সাদ্দাম হোসেনের মেয়ে। সাদ্দাম হোসেন পেশায় রাজমিস্ত্রি ও তার স্ত্রী মিরা আক্তার পোশাক শ্রমিক। তারা আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের টেঙ্গুরী এলাকায় জনৈক আলী হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন।

র‍্যাব জানায়, অপহরণকারী অজ্ঞাত যুবক ঘটনার কয়েকদিন আগে আলী হোসেনের বাড়িতে বাসা ভাড়া নিতে আসে। তখন বাড়ির ম্যানেজার নেই বলে সে কথাবার্তা বলে চলে যায়। অপহরণকারী পুনরায় ঘটনার দিন বাসা ভাড়া নিতে আসে। সেসময় গেটের বাইরে খোলা জায়গায় মিরা ও সাদ্দাম দম্পতির সন্তান আঁখি এবং মিরাজ খেলাধুলা করছিল।

অপহরণকারী কথাবার্তার একপর্যায়ে ভুক্তভোগী আঁখির ভাই মিরাজকে (৫) কিছু টাকা দিয়ে কৌশলে দোকানে চকলেট কেনার জন্য পাঠায়। সেই ফাঁকে অজ্ঞাতনামা যুবক দোকানের আড়ালে থাকা আঁখিকে কোলে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে ১ এপ্রিল ওই শিশুর দাদা বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি শিশু অপহরণ মামলা দায়ের করেন।

র‍্যাব আরো জানায়, অপহরণকারী যুবক জিরানী এলাকায় ভাড়া বাসায় স্ত্রীসহ থেকে রাজমিস্ত্রির কাজ করতো। তার স্ত্রী ও অপহৃত শিশুটির মা মিরা আক্তার আশুলিয়ায় একই পোশাক কারখানায় চাকরি করতো। এরইমধ্যে অপহরণকারী যুবকের স্ত্রী পরকীয়া করে ৭ বছরের সন্তান রেখে আরেকজনের সঙ্গে পালিয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়ে যায় ওই যুবক। পরে সে সন্দেহ করে অপহৃত শিশুর মা তার স্ত্রীর সন্ধান জেনে থাকতে পারে। এরপর বার বার জিজ্ঞেস করেও তথ্য না পেয়ে সে সাদ্দাম ও মিরা দম্পতির দেড় বছরের শিশু আঁখিকে অপহরণ করে।

এরপর সে শিশুটির মা-বাবাকে ফোন করে জানায়, তার স্ত্রীর সঠিক ঠিকানা জানালে শিশুটিকে ফেরত দেওয়া হবে। তবে তারা না জানায় তথ্য দিতে পারেনি। এরমধ্যে ওই যুবক ভুক্তভোগী শিশুর মা-বাবার কাছে ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এর জের ধরেই ওই যুবককে আটক করা হয়।

আটক যুবক রাশেদের বরাত দিয়ে র‍্যাব জানায়, ওই শিশুকে অপহরণ করে গাজীপুরে তার ফুপুর বাড়িতে রেখে সে রংপুর নিজের বাড়ি চলে যায়। ওই ফুপুর নিজের মেয়ে না থাকায় তিনি শিশু আঁখিকে মায়ের আদরে লালন-পালন করতে থাকে। তার কাছ থেকেই র‍্যাব ওই শিশুকে উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানায় র‍্যাব।