বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাঘমারা বড়দুলালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে (১১) ধর্ষন চেষ্টার ঘটনায় গ্রাম্য সালিশ বৈঠকে ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক আব্দুল লতিফ খানকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছ। গত বুধবার রাতে উপজেলার বার্থী এলাকার এলাহী অটো রাইচ মিলে এক সালিশ বৈঠকে এই জরিমানা করা হয়।

সালিশ বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্র জানায়, বুধবার রাত ৯টার দিকে গৌরনদী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ফরহাদ মুন্সীর মালিকানাধীন এলাহী অটো রাইচ মিলে জেলা পরিষদ সদস্য ও গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ.এম রাজু আহম্মেদ হারুন, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ফরহাদ মুন্সী এবং বার্থী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদারের উপস্থিততে শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা পরিষদ সদস্য এইচ.এম রাজু আহম্মেদ হারুন মুঠোফোনে বলেন, ফরহাদ মুন্সীর বার্থীর রাইচ মিলে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে বুধবার রাতে সালিশের মাধ্যমে বিষয়টির মিমাংশা করা হয়। শিশু ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর দায়ে অভিযুক্ত শিক্ষক লতিফ খানকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তাৎক্ষনিক জরিমানার টাকা আদায় করে নির্যাতিতার পরিবারের হাতে দেয়া হয়েছে।

যৌন নীপিড়নের ঘটনায় আইনী পদক্ষেপ না নিয়ে সালিশরা অভিযুক্তকে জরিমানা করায় তাদের বিরুদ্ধে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অপরদিকে শিশু ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর ঘটনায় বিভিন্ন দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় টনক নড়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. বদিউজ্জামান ও নাদিরা আফরিন গত বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বার্থী ইউপি সদস্য খায়রুল আহসান খোকন খান জানান, এ ঘটনার নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে জরুরি সভায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় আলোচনা করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার সকালে স্কুলের শ্রেণীকক্ষে অতিরিক্ত সময় প্রাইভেট পড়ানোর কথা বলে বাঘমারা বড়দুলালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণীর ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আঃ লতিফ খান।