ইরানি জেনারেল কাশেম সোলেইমানি হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ইরাকে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। বিষয়টির দীর্ঘমেয়াদী বা যুদ্ধের দিকে যাবে কি না তা পরবর্তী কর্মকাণ্ডের ওপর নির্ভর করছে। তবে সোলেইমানি হত্যার বিষয়টি মার্কিন নির্বাচনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠতে পারে, বিশ্ব মহলে এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে।
বলা হচ্ছে, স্বল্পমেয়াদে এর কিছু সম্ভাব্য প্রভাব পড়তে পারে ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিক প্রাইমারি প্রেসিডেন্ট বাছাই পর্বে, যা মাত্র একমাসের মাথায় শুরু হতে যাচ্ছে। এ বছর নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
একজন যুদ্ধকালীন প্রেসিডেন্ট?
প্রথাগতভাবে যখন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্ট বড় ধরনের পররাষ্ট্রনীতির সংকটে থাকেন, তখন সে জনসমর্থনের দিক থেকে অন্তত কিছুদিনের জন্য কিছুটা সুবিধা এনে দেয়। ‘পতাকার চারদিকে দাঁড়াও’ মনোভাব ১৯৯১ সালে মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের সময় প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচডব্লিউ বুশের জন্য সহায়ক হয়েছিল। নাইন ইলেভেন বোমা হামলা এবং আফগানিস্তানে বোমা হামলার পর প্রেসিডেন্ট বুশের জনপ্রিয়তা রেকর্ড ছুঁয়েছিল।
তবে ২০১১ সালে লিবিয়ায় বিমান হামলার পরে বারাক ওবামার জনপ্রিয়তার পারদে কোনো পরিবর্তন হয়নি। যখন রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের কারণে ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ায় মিসাইল আক্রমণ করেন, তখন তার জনপ্রিয়তার পারদ সামান্য উঠেছিল। যদিও তার প্রেসিডেন্সির পুরো সময়টা জুড়ে তার জনপ্রিয়তা প্রায় একই রকম দেখা গেছে।
এদিকে সোলেইমানি হত্যার পর প্রথম জরিপে দেখা গেছে, যেভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প পরিস্থিতি সামলাচ্ছেন, তা নিয়ে জনমনে দ্বিমত তৈরি হয়েছে। এছাড়া ট্রাম্পের অন্যান্য যেসব কর্মকাণ্ড রয়েছে সেখানেও এক রকম দ্বিমত রয়েছে। জনসংখ্যার একটি অংশ তার পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন। আবার আরেকটি অংশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, প্রেসিডেন্ট সতর্কতার সঙ্গে পরিকল্পনা করে পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
রিপাবলিকান সমর্থন
এ ক্ষেত্রে অবশ্য ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দলের সমর্থকদের কাছ থেকে সমর্থন পাবেন- যেটা তিনি সবসময়ে তার বিতর্কিত বা আলোচিত সব পদক্ষেপেই পেয়েছেন। হাফিংটন পোস্টের জরিপে দেখা গেছে, ৮৩ শতাংশ রিপাবলিকান ওই ড্রোন হামলাকে সমর্থন করছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা সোলেইমানি হামলার জের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তাদের বিপক্ষে একপ্রকার জবাব দেয়া হচ্ছে সমর্থকদের পক্ষ থেকে ‘তোমার ক্ষতির জন্য দুঃখিত।’ মধ্যপ্রাচ্যের এ নাটকের ফলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইমপিচমেন্ট ঘটনাবলী থেকে জাতীয় নজর অন্যদিকে সরে গেছে এবং সিনেটে শুনানি বিলম্বিত হচ্ছে। সোমবার সকালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বেশ কয়েকটি টুইটেও সে বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে।
এদিকে কাশেম সোলেইমানিকে হত্যা নিয়ে হাফিংটন পোস্টের জরিপে বেশ কয়েকটি সুসংবাদ বেরিয়ে এসেছে রিপাবলিকান পদপ্রার্থী জো বাইডেনের জন্য, যেখানে ৬২ শতাংশ ডেমোক্র্যাটিক সমর্থক বলেছেন যে, ইরান প্রসঙ্গে তারা জো বাইডেনকে বিশ্বাস করেন। ফলে তিনি স্যান্ডার্স এবং ওয়ারেনের চেয়ে বেশ এগিয়ে রয়েছেন। তাদের ক্ষেত্রে এ হার ছিল ৪৭ শতাংশ।