সোলেইমানির মুখ ফুটে উঠল সেনাদের প্যারেডে

:
: ৪ years ago

ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অভিজাত কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলেইমানি তার দেশের জনগণের কাছে একজন প্রিয় নেতা। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে গত শুক্রবার ইরাকের রাজধানী বাগদাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ড্রোন হামলা চালিয়ে জেনারেল সোলেইমানিকে হত্যা করা হয়।

এদিকে, সম্প্রতি সেনাবাহিনীর একটি প্যারেডে জেনারেল সোলেইমানির প্রতিকৃতি তৈরির একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, সমবেত সেনারা একত্র হয়ে তার মুখের প্রতিকৃতি তৈরি করেছেন। একটি প্যারেডের অংশ হিসেবে জেনারেল সোলেইমানির প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জ্ঞাপন করেই এই প্রতিকৃতি তৈরি করা হয়। সেনারা একে একে জড়ো হতে থাকেন। এদিক সেদিকে পরিবর্তন করে তারা যে প্রতিকৃতি তুলে ধরেছেন তাতে খুব সুন্দরভাবে সোলেইমানির চেহারা ফুটে উঠেছে।

ওই মহড়ার সময় দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি এবং সামরিক বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সোলেইমানির মৃত্যুতে ইরানজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার জানাজা ও দাফনে রাজপথে ছিল জনসমুদ্র। তিনি ছিলেন তার দেশের মানুষের কাছে একজন আদর্শ নেতা। জেনারেল সোলেইমানির মৃত্যুতে তিনদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়। ইরাক ও ইরানের বিভিন্ন স্থানে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং সর্বত্রই মানুষের ঢল নামে।

 

জেনারেল সোলেইমানি (৬২) ইরানের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় কেরমান প্রদেশের একটি দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই জীবিকার তাগিদে তাকে কাজ শুরু করতে হয়। কাজের শেষে যেটুকু সময় পেতেন ততটুকুই তিনি ধর্মীয় শিক্ষার পেছনে ব্যয় করতেন। ১৯৭৯ সালে ইরানি বিপ্লবের সময় দেশটির সেনাবাহিনীতে তরুণ সোলেইমানির উত্থান ঘটে। যদিও স্কুলের পড়াশুনা শেষ করতে পারেননি এই জেনারেল।

১৯৮০ সালে ইরাক-ইরান যুদ্ধে ইরাক সীমান্তে ইরানি বাহিনীকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সোলেইমানি। সে সময় তাকে জাতীয় বীর আখ্যা দেওয়া হয়। তারপর থেকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি এই জেনারেলকে। তিনি সমানভাবে সামরিক বাহিনী ও সাধারণ মানুষদের কাছে প্রিয় একজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন। ইরানজুড়ে নানারকম বিভেদ থাকলেও তার মৃত্যু ইরানের জনগণকে আগের চেয়ে আরও বেশি ঐক্যবদ্ধ করেছে।