কে কোন সেশনে দাপট দেখিয়েছে, বিরতিতে একটা পাইচার্ট দেখায় সম্প্রচার টেলিভিশন। অ্যান্টিগা টেস্টের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশন তো অবশ্যই, এখনো পর্যন্ত যে চারটি সেশন হয়েছে, কোনোটিতেই বাংলাদেশ ন্যূনতম লড়াইয়ের ছাপ রাখতে পারেনি। পাইচার্টের ভরাট অংশ তাই ক্যারিবীয়দের মেরুন রাঙায় রঙিন! কাল দিনভর নিগৃহের পর আজ শুরুটাও হলো একইভাবে। ৩ উইকেটে ২৭১ তুলে লাঞ্চে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ বাংলাদেশকে যেন বলতে চেয়েছে, ‘একটু খেয়েদেয়ে আসো, আরও ভোগান্তি আছে তোমাদের!’
কী অসহায়, কী দৃষ্টিকটু আত্মসমার্পণ। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা গেলেন-এলেন, বোঝাতে চাইলেন, এই সবুজ উইকেটে রান করা দূরে থাক, দাঁড়িয়ে থাকাই কঠিন। বাংলাদেশের বোলারদের সৌজন্যে ব্যাটসম্যানদের সেই ‘বদ্ধভূমি’ মুহূর্তেই হয়ে গেছে রানের ফোয়ারা ছোটানোর মঞ্চ! ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা এখন বাংলাদেশকে শেখাচ্ছে, টেস্টে ব্যাটিং কীভাবে করতে হয়! সঙ্গে যদি যোগ হয় ফিল্ডারদের ক্যাচ ফসকানো—ক্যারিবীয়দের রান উৎসব বাংলাদেশ আটকাবে কীভাবে? প্রথম দিনে যাঁরা একটু আটকেছিলেন সেই সাকিব-মাহমুদউল্লাহ তো লম্বা স্পেলে বোলিং করছেন না। ঘাসের উইকেট বলে কী স্পিন করা বারণ?
২ উইকেটে ২০১ রান নিয়ে খেলতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাই আরামে এগিয়ে চলল। পুরো শ্রীলঙ্কা-সিরিজে লম্বা ইনিংসের খোঁজে থাকা ক্রেগ ব্রাফেট সেঞ্চুরি করলেন কামরুল ইসলামকে বাউন্ডারি মেরে। আগের দিন ‘নাইট ওয়াচম্যান’ হিসেবে নামা লেগ স্পিনার দেবেন্দ্র বিশুও বাংলাদেশের এই দুর্দিনের সুযোগ নিতে চাইলেন। অবশ্য বেশি দূর এগোতে পারেননি। পুরো সেশনে হাতে গোনা যে কটি ভালো বল করেছে বাংলাদেশের বোলাররা, সেগুলোর মধ্যে সেরা বলা যায় যেটিকে, সেটিতেই বোল্ড হলেন বিশু (১৯)। বিশুর স্টাম্প উপড়ে ফেলেও কামরুল ইসলাম খুব একটা উচ্ছ্বসিত হতে পারলেন না! বাজে ব্যাটিংয়ের পর উইকেট আসছে লম্বা বিরতিতে, আনন্দ আসবে কোত্থেকে?
এই ভোগান্তির মধ্যেও ফিল্ডারদের ক্যাচ হাতছাড়ার দৃশ্যও দেখা যাচ্ছে। কাল উইকেটকিপার নুরুল হাসান ক্যাচ ফেলেছেন। আজ ৮৯ ওভারে আবু জায়েদের বলে গালিতে ব্রাফেটের কঠিন ক্যাচটা যদি লিটন দাস লুফে নিতে পারতেন, ক্যারিবীয় ওপেনার থামতে পারতেন ১১০ রানে। যিনি অপরাজিত ১২১ রানে। এমনিতে সুযোগ আসছে লম্বা বিরতিতে, সেটি ‘ফুল’, ‘হাফ’ যে ‘চান্স’ই হোক কাজে লাগাতে না পারলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ রানের পাহাড় কেন, পর্বত না গড়ে থামবে না।