সেই বাসটি রূপার পরিবারকে দেওয়ার নির্দেশ

:
: ৬ years ago

চলন্ত যে বাসে রূপাকে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়েছে, ছোঁয়া পরিবহনের সেই বাসটি নিহত রূপার পরিবারকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ভারপ্রাপ্ত বিচারক, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়া।

সোমবার রায়ে বাসটির চালকসহ চারজনকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ এবং একজনকে সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশের পাশাপাশি এ নির্দেশ দেন তিনি।

একই সঙ্গে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বাসটির সুপারভাইজারকে জরিমানা হিসেবে এক লাখ টাকাও রূপার পরিবারকে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনো ফৌজদারি অপরাধের রায়ে এ ধরনের নির্দেশ সচরাচর দেখা যায় না।

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে চলন্ত বাসে এক তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে মিল ছিল রূপা ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার। রূপাকেও চলন্ত বাসে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে লাশ ফেলে দেওয়া হয়েছিল জঙ্গলে। মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই সেই ঘটনার বিচার হলো।

নির্ভয়ার ধর্ষণের ঘটনা যেভাবে ভারতে তোলপাড় সৃষ্টি করেছিল; রূপাকে ধর্ষণ-হত্যার ঘটনাও একইভাবে আলোড়িত করে বাংলাদেশের মানুষকে। ওই ঘটনার পর এদেশের রাস্তাঘাট ও গণপরিবহনে নারীদের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টিও নতুন করে সামনে চলে আসে। বিশেষ করে যেসব কর্মজীবী নারী দূর-দূরান্তে কাজের প্রয়োজনে গণপরিবহনে যাতায়াত করেন, তারা কতটুকু নিরাপদ- তা নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়।

ঘটনার পরপরই বাসটির চালক ও সহকারীসহ পাঁচজনকে আটক করে মামলা দায়ের করে পুলিশ। এর পর গত ২৯ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল আদালতে। এই মামলায় রূপার পরিবারের পক্ষে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাসহ অনেকেই আইনি সহায়তা দিতে এগিয়ে এসেছিলেন, যাতে রূপা ধর্ষণ ও হত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। রায়ের পর অনেকেই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে যে বাসটিতে নৃশংস এই অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, সে বাসটি রূপার পরিবারকে দিতে নির্দেশ দেওয়ায় অনেকে একে স্বাগত জানিয়েছেন।

টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি একেএম নাসিমুল আক্তার বলেছেন, ঘটনার ১৭৩ দিনের মধ্যে মাত্র ১৪ কার্যদিবসেই সব কার্যক্রম শেষ করে চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় দিলেন আদালত।