জমজ মাথার শিশু রাবেয়া ও রোকেয়ার অস্ত্রোপচার সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার (২ আগস্ট) সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (ঢাকা) এ অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। গত বুধবার (৩১ জুলাই) দিনগত রাত ১টা থেকে টানা ৩৩ ঘণ্টা সফল অস্ত্রোপচারের পর মাথা জোড়া লাগানো জমজ শিশুকে পৃথক করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর সহৃদয়তায় পাবনার চাটমোহরের রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা বেগম দম্পতির তিন বছর ১৫ দিন বয়সের এ দুই বাচ্চা ২০১৭ সাল থেকেই সামগ্রিক সহায়তা পেয়ে আসছিল। হাঙ্গেরি সরকারের মাধ্যমে ‘অ্যাকশন ফর ডিফেন্সলেস পিপল’ নামক সংগঠনও সক্রিয় সহায়তা প্রদান করেছে। শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সামন্ত লাল সেন বিষয়টির সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করছিলেন। ইতোপূর্বে প্রাণবন্ত বাচ্চা দুটির দু-স্তরে ‘এন্ডোভাস্কুলার সার্জারি’ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ৪৮টি ছোট বড় অপারেশন হাঙ্গেরিতে সম্পন্ন হয়।
অস্ত্রোপচারের সবচেয়ে জটিল অংশটি ‘জমজ মস্তিষ্ক’ আলাদা করণের কাজটি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (ঢাকা) সম্পন্ন হয়। এ অস্ত্রোপচারে হাঙ্গেরি বিশেষজ্ঞদের সাথে সিএমএইচের নিউরো অ্যানেসথেসিওলজিস্টদের তত্ত্বাবধানে, নিউরো ও প্লাস্টিক সার্জনগণসহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট, হার্ট ফাউন্ডেশন, নিউরো সাইন্স ইনস্টিটিউট, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল ও শিশু হাসপাতালের প্রায় শতাধিক সার্জন ও অ্যানেসথেসিওলজিস্ট এই জটিল অপারেশনে অংশগ্রহণ করেন।
এ ধরনের অস্ত্রোপচার সারা বিশ্বেই বিরল ঘটনা। উপমহাদেশে এ রকম অস্ত্রোপচার এটিই প্রথম। এ অস্ত্রোপচার বাংলাদেশে সম্পন্ন হওয়ায় বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পেল। এ ধরনের চিকিৎসা সহায়তা প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরির জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোড়দার হবে।
ঢাকা সিএমএইচ কর্তৃপক্ষ জানান, এ ধরনের অস্ত্রোপচার অত্যন্ত জটিল এবং সাফল্যের হার খুব বেশি নয়। অস্ত্রোপচারের পর রাবেয়া এবং রোকেয়ার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। কিন্তু এ ধরনের অস্ত্রোপচারে সর্বদাই অপারেশন পরবর্তী ঝুঁকি এবং জটিলতা অত্যন্ত বেশি। সমগ্র দেশবাসীর কাছে রাবেয়া এবং রোকেয়ার দ্রুত সুস্থ্যতার জন্য দোয়া প্রার্থনা করা হয়েছে।