রবার্তো কার্লোসের ফ্রি কিক থেকে গোলটি যদি দেখাও থাকে আরেকবার দেখুন। আর না দেখা থাকলে তো দেখতেই হবে। কার্লোসের এই গোল নিয়ে কম বিশ্লেষণ হয়নি। ছোটবেলা থেকে কার্লোস এভাবেই ফ্রি কিক নিতেন। কিন্তু ইতিহাসে উঠে যাওয়া গোল কার্লোস ওই একবারই করতে পেরেছেন। এমনকি মাঠে এবং অনুশীলনে কার্লোস আরো অনেকবার ওই একই রকম করে গোল করতে চেয়েছেন কিন্তু পারেননি। কী হয়েছিল ওই ফ্রি কিকের সময় ৪৫তম জন্মদিনে জানালেন ব্রাজিলিয়ান লিজেন্ড।
‘ফ্রি কিকটি ফ্রান্সের বিপক্ষে নিয়েছিলাম’, মুচকি হাসিতে বলেন কার্লোস। ‘এছাড়া রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে টেনিরিফের বিপক্ষে কর্ণারের কোণা থেকে আরো একটি গোল করেছিলাম। সেটা অবশ্য ফ্রি কিক ছিল না। কিন্তু এটার থেকে বেশি কঠিন ছিল। দর্শকরা ফ্রি কিকের গোলটাকে বেশি পছন্দ করেছে’, জানান ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা এই লেফট ব্যাক।
এই গোল নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। কারো কারো মতে, এটা এমন এক গোল যা কেবল ব্রাজিলিয়ান কারো দ্বারাই করা সম্ভব। কার্লোস ফ্রান্সের মানব দেয়ালের ঠিক বিপরীত দিক থেকে ফ্রি কিকটি নেন। গোলবার থেকে ৪০ গজ দূরে বল পাতান রিয়াল মাদ্রিদের এই সাবেক তারকা। তারপর যে ফ্রি কিকটি নেন সেটা গোলের ১০ গজ বাইরে দিয়ে যাওয়া শুরু করে। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে ফ্রান্সের জালে জড়ায় বলটি।
কার্লোস বলেন, ‘আমি সবসময় ফ্রি কিক নেওয়ার সময় বলের মুখটা (হাওয়া দেওয়ার জায়গা) সামনের দিকে বসাতাম। এটাই বলের সব থেকে শক্ত জায়গা এবং শট নিলে বেশি গতি হয়। তারপর আমি বলের বাম পাশের নিচে শট নিয়ে মানব দেয়ালের ডান পাশের উপর দিয়ে মারি। এতে করে বলটি বেশ ঘুরে আসে।’
কিন্তু বলটি যেভাবে মারতে চেয়েছিলেন সেভাবে মারতে পারেননি জানিয়ে রবার্তো কার্লোস বলেন, ‘আমি এখনো ওই গোলের কথা স্মরণ করি। আমি আসলে ফ্রান্সের গোলের ডানপাশের বার লক্ষ্য করে শটটি নিয়েছিলাম। কিন্তু সেটা লক্ষ্যের ধারে কাছ দিয়েও যায়নি। গোলরক্ষকও ধরে নিয়েছিল আমি বামপাশ দিয়েই বল মারবো। এটা নিয়ে তার বেশ আত্মবিশ্বাস ছিল।’
ওই গোলের চোখ ধাঁধাঁনো ব্যাপার তো একটাই। তা হলো বলের ঘূর্ণি। গোলে থেকে অনেক বাইরে যাওয়ার কথা যে শট তা আশ্রয় নিল জালে। অবাক কার্লোস নিজেও। তিনি বলেন, ‘বলের ঘূর্ণিটা আমাকেও অবাক করে। বলটি পোস্টের বাইরের দিকেই যাচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ উল্টো দিকে ঘোরা শুরু করলো এবং জালে ঢুকে গেল। এরকম গোল ক্যারিয়ারে একবারই পাওয়া যায়। আমি আরো ক’বার এমনটা চেষ্টা করেছি কিন্তু আর হয়নি। এটা অসম্ভব সুন্দর একটি গোল যা ভোলা অসম্ভব।’