সূর্যোদয়ের দেশ জাপানে বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা ও প্রসারে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘টোকিও বইমেলা’। বাংলাদেশ সাংবাদিক ও লেখক ফোরাম, জাপান এই আয়োজন করে।
‘বই পড়ুন,আলোকিত বিশ্ব গড়ুন’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে উৎসবমুখর পরিবেশে টোকিওর ইতাবাশি ওইয়ামা গ্রিন হলে অনুষ্ঠিত হয় এই মেলা। জাপানের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হাজিমে ইশিই সান মেলা উদ্বোধন করেন। তার লেখা ‘ঢাকায় জাপানের বিমান ছিনতাই’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে এ মেলা শুরু হয়। বইটির বাংলা অনুবাদক কাজুহিরো ওয়াতানাবে সান।
মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। বিশেষ অতিথি ছিলেন মাৎসুশিরো হোরিগুচি, কেইকো আজুমা ও কাজুহিরো ওয়াতানাবে সান। এছাড়া বইপত্র ও প্রথমা প্রকাশনও মেলায় অংশ নেয়।
বাংলাদেশ সাংবাদিক ও লেখক ফোরামের সভাপতি জুয়েল আহসান কামরুল অনুষ্ঠানে আগত অতিথি ও লেখকদের উত্তরীয় পড়িয়ে দেন। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক ও বইমেলা কমিটির আহ্বায়ক ডা. শাহরিয়ার মো. সামস (সামি) বইমেলার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।
ঘোষণাপত্রে সব কূপমন্ডুকতার ঊর্ধ্বে উঠে মহান ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারাবাহিকতা রক্ষার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রবাসে শত ব্যস্ততা ও সীমাবদ্ধতার মাঝে বইমেলার এমন স্বার্থক আয়োজন সত্যিই গর্বের। সবার সদিচ্ছা ও সহযোগিতায় এটা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাসকে তাদের ভূমিকার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ।’
মেলায় বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী ও ক্রেতার সমাগম ঘটে। এছাড়াও প্রবাসে ‘বঙ্গসাহিত্য চর্চার সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় বইমেলা কমিটির উপদেষ্টা মনজুরুল হক ও আবদুর রহমান নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক ইয়াসুনারি কাওয়াবাতা ও কেনজাবুরো ওয়ের সাক্ষাৎকার নেয়ার স্মৃতিচারণ করেন। কাজুও আজুমা বলেছিলেন, ‘আমি আরেকবার জন্ম নিলে বাঙালি হয়ে জন্ম নিতে চাই।’ কাজুও আজুমা রেইতাকু বিশ্ববিদ্যালয় ও সুকুবা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস প্রফেসর। তিনি বাংলা ভাষাসাহিত্য নিয়ে বিশেষত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন।
মেলায় আগত জাপান প্রবাসী বাংলাদেশিরা বলেন, প্রবাসে এমন সৃজনশীল উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।