রাজধানীর সদরঘাট থেকে গাজীপুর মহানগরীর গাজীপুরা রুটে চলাচলকারী ‘সু-প্রভাত স্পেশাল বাস সার্ভিস’ পরিবহনের কিছু বাসের রঙ বদলে এখন ‘সম্রাট ট্রান্সলাইন (প্রা.) লি.’ নামকরণ করা হচ্ছে। বুধবার গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের গাজীপুরা এলাকায় সু-প্রভাত পরিবহনের বাসের রঙ বদলে রাতারাতি সম্রাট পরিবহন নামে পরিবর্তিত হতে দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, ঢাকা বসুন্ধরা গেট এলাকায় গত মঙ্গলবার সু-প্রভাত পরিবহনের বাসের চাপায় প্রাণ হারান বাংলাদেশ ইউনির্ভাসিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্র আবরার আহাম্মেদ চৌধুরী। একজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র মারা যাওয়ার পর রাতারাতি বদলে যাচ্ছে সু-প্রভাত বাসের চেহারা। এ কোম্পানির বিভিন্ন বাস রঙ বদলে সম্রাট পরিবহনে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এছাড়া গাড়ির মালিকরা তাদের সুবিধা মতো কোম্পানিতে নিজেদের বাস অন্তর্ভুক্ত করতে ব্যস্ত।
একাধিক শ্রমিক, বাসচালক ও সুপারভাইজারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সু-প্রভাত স্পেশাল বাস সার্ভিসটির রুট পারমিট রাজধানীর সদরঘাট থেকে রামপুরা হয়ে উত্তরা পর্যন্ত। এক প্রভাবশালী পরিবহন নেতার প্রভাবের কারণে চলছে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর গাজীপুরা পর্যন্ত। ৭০টি বাস চলার অনুমোদন থাকলেও চলছে প্রায় সাড়ে তিনশ বাস।
সু-প্রভাতের টঙ্গী স্টেশন রোডের সুপারভাইজার কামরুল ইসলাম জানান, সু-প্রভাত পরিবহনের বাসের রঙ বদলে অন্য পরিবহনের নামে চলার বিষয়টি তার জানা নেই। বিষয়টি মালিক কর্তৃপক্ষ বলতে পারবে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের (দক্ষিণ) সহকারী কমিশনার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সু-প্রভাত পরিবহনের কোনো বাস অন্য কোম্পানির নামে পরিবর্তিত হচ্ছে- এমনটা আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
তিনি জানান, সু-প্রভাত পরিবহনের কোনো বাস গাজীপুরে প্রবেশ করতে পারবে না। কোনো কোম্পানি তাদের বাস অন্য কোম্পানিতে পদ্ধতিগতভাবে স্থানান্তর করতেই পারে। তবে বাসটি যে কোম্পানিতে যাচ্ছে সে কোম্পানিটির বৈধ অনুমোদন আছে কি-না সেটা দেখতে হবে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন প্রগতি সরণি এলাকায় সু-প্রভাত বাসের চাপায় বিইউপির শিক্ষার্থী আবরার আহাম্মেদ চৌধুরী নিহত হন।
পরে সড়ক অবরোধ করে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা আট দফা দাবি ঘোষণা করেন। বুধবার সকাল থেকেও রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যান।
বিকেলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামের সঙ্গে বৈঠক শেষে ২৮ মার্চ পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।