সংসদীয় কমিটির কাছে কুমিল্লা সদরের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন লিখিত অভিযোগ করেছেন, ভোটের বছরে 'সিন্ডিকেট করে' রডের দাম বাড়িয়ে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যাহত করা হচ্ছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য অভিযোগে লিখেছেন, দেশে হঠাৎ করে রডের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ঠিকাদাররা অনেক জায়গায় কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।

কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম চৌধুরী বরাবরে পাঠানো তার এ অভিযোগপত্র নিয়ে বৃহস্পতিবার কমিটির বৈঠকে আলোচনা হয়। তবে ওই সাংসদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না।

চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচনী বছরে মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে উন্নয়ন সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি করে সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন ব্যাহত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর আগে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রিজের (বিএসিআই) পক্ষ থেকেও একই ধরনের অভিযোগ আনা হয়।

টিসিবির হিসাব অনুযায়ী, গত ২৯ মার্চ ঢাকায় ৬০ গ্রেডের এমএস রড টনপ্রতি ৭১ হাজার টাকা থেকে ৭২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে; যা এক সপ্তাহ আগে ৬২ হাজার থেকে ৬৫ হাজার টাকা ছিল।

অন্যদিকে ৪০ গ্রেডের এমএস রডের টনপ্রতি দর ছিল ৫৮ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা। আগের সপ্তাহে এ দাম ৫২ হাজার থেকে ৫৩ হাজার টাকা ছিল।

অবশ্য রড উৎপাদনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ অটো রি-রোলিং অ্যান্ড স্টিল মিলস অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ রি-রোলিং মিলস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা কারসাজির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাদের দাবি, উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় রডের দাম বেড়েছে। সরকার কিছু নীতিগত উদ্যোগ নিলে রডের দাম টনপ্রতি অন্তত পাঁচ হাজার টাকা কমানো সম্ভব।

এদিকে আসন্ন রোজার মাসে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার ব্যাপারে কঠোর নজরদারির সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম বলেন, রোজায় কোনো জিনিসের দাম বেড়েছে- এটা আমরা দেখতে চাই না। এজন্য যা যা করা দরকার মন্ত্রণালয় সেটা করবে।

এদিকে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বৈঠকে রোজা উপলক্ষে ২ হাজার মেট্রিক টন চিনি, ১৫০০ মেট্রিক টন মশুর ডাল, ১০ লাখ ৮৬ হাজার ৯৫৭ লিটার ভোজ্য তেল, ১ হাজার ৯৫৫ মেট্রিক টন ছোলা কেনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া রোজার মাসে সব বিভাগীয় ও জেলা শহরে ১৮৭টি ট্রাকের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে।

তাজুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- কমিটির সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, ছানোয়ার হোসেন, লায়লা আরজুমান্দ বানু ও মোহাম্মদ হাছান ইমাম খান।