স্থল নিম্নচাপের প্রভাবে বৃহস্পতিবার থেকে ঝরছে বৃষ্টি। আজ শনিবারও তা অব্যাহত আছে। টানা দুই দিনের বৃষ্টিতে রাজধানীর অলি-গলি থেকে রাজপথ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে রাজধানীবাসী। রাজধানীর মহাসড়কে দেখা যায় অপেক্ষাকৃত কম যানবাহন। রিকশা, সিএনজির চালকেরাও পড়েছেন বিপাকে। একটুখানি পথ যেতে না যেতেই বিকল সিএনজির ইঞ্জিন।অটোরিকশার চালকরা জানান, রাজধানীর বিভিন্ন স্থান পানিতে ডুবে আছে। বেশির ভাগ রাস্তায় হাঁটু সমান পানি। ফলে ইঞ্জিনে পানি ঢুকে সিএনজি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মাটি হয়ে যাচ্ছে পুরো দিনটাই।
রাজধানীর ফকিরাপুল, আরামবাগ, কাকরাইল, মিরপুর, রাজাবাজার, ধানমণ্ডি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পুরো এলাকার মূল সড়ক থেকে অলি গলি পানিতে ডুবে আছে। এরমাঝে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে বিকল হয়ে পড়ে দেখতে যায় অনেক যানবাহন। যার মধ্যে সিএনজি অটোরিকশাই বেশি।আরামবাগে কথা হয় সিএনজি চালক বোরহান উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টার পর তার অটোরিকশাটি টেনে নিরাপদ স্থানে নিতে পেরেছেন।অটোরিকশার কী হলো জানতে চাইলে তিনি আরটিভি অনলাইনকে বলেন, মামা কী করুম। সকালে গাড়িটা লইয়া বের হয়ছি। দুইডা ক্ষেপ মাইরা তিনশ টাকা কামাইছি। আরেকটা ক্ষেপ লইয়া মালিবাগ মোড় থেকে মতিঝিল যাইতে ফকিরাপুল আইসা ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেছে।
শুধু আমি না, আমার মতো অনেক চালকরে দেখছি গাড়ি আটকাইয়া রাস্তায় পড়ে থাকতে। আসলে বৃষ্টি অইলে আমগো বিপদ বেশি অয়। বৃষ্টি অইলে প্রায় এমন বিপদে পড়তে হয়। কিন্তু পেট চালানো তো লাগবো!ফকিরাপুল মোড়ে বোরহানের মতো আরও বেশ কয়েকজন চালকের একই দশা দেখা যায়। এর মধ্যে মো. আল আমিন হোসেন বিড় বিড় করে মেয়রকে বকে যাচ্ছেন। কাছে যেতে বলে উঠলেন, দেখেন ভাই; সিএনজির মধ্যে তিনটা মহিলা যাত্রী বইসা আছে ৩০ মিনিট ধরে। হেরা ধানমণ্ডি যাইবো ডাক্তার দেখাইতে। কমলাপুর থেকে উঠছে। বৃষ্টি দেইখা প্রথমে যাইতে চাই নাই। পরে রোগী শুইনা রওনা দিলাম। আর এখন ফকিরাপুলে আটকে আছি। কী করুম মাথায় কিছু খেলতাছে না। হেগুরে কই নামামু? কই সিএনজি নামামু? রাস্তায় পানি আর পানি। এ শহরের যে কি অইবো। একটু বৃষ্টি অইলে পানি উইডা যায় হাঁটু সমান।বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন শফিকুর রহমান। থাকেন রাজধানীর কাকরাইল। আরটিভি অনলাইনকে তিনি বলেন, সকাল ১১টার মধ্যে মিরপুরে ১২ নাম্বার যেতে হবে। বৃষ্টিতে আধা ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি যাওয়ার কোনো গাড়ি পাচ্ছি না। সিএনজিও যেতে চাইছে না।“১২ নাম্বার থেকে কাকরাইল সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া ২০০ থেকে ২৫০ টাকা হবে।
মিটারে গেলে আরো কম লাগে। কিন্তু আজ ৩০০ টাকা বললাম, যাবে না। চালক ৫০০ টাকা চায়।” কাকরাইল মোড়ে বৃষ্টিতে ছাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন সাহেলা বেগম। যাবেন সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে। তিনি আরটিভি অনলাইকে জানালেন, কয়েকটি সিএনজি চালককে বলার পরও যাবে না। ১৫০ টাকার বদলে ৪০০ টাকা দিতে চেয়েছি। তবুও যাচ্ছে না।এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনিবার সকাল পর্যন্ত গেলো ২৪ ঘণ্টায় গোপালগঞ্জে সর্বোচ্চ ২৭১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে ঢাকায় বৃষ্টির পরিমাণ ১৪৯ মিলিমিটার। মধ্যাঞ্চলের টাঙ্গাইলে ১৪৬ মিলিমিটার, মাদারীপুরে ১৭১ মিলিমিটার, ফরিদপুরে ১৪৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। উপকূলীয় প্রায় সব এলাকাতেই প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
নিম্নচাপের প্রভাবে বায়ু চাপের তারতম্য এবং গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হওয়ায় দেশের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হচ্ছে।আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বৃষ্টিপাত কমে যেতে পারে।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com