সাবেক মন্ত্রীর ভাই পরিচয়ে প্রতারণা করে বিয়ে পুলিশ কর্মকর্তার, অতপর…

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

নিজের আসল পরিচয় গোপন রেখে সাবেক মন্ত্রীর ভাই পরিচয়ে এক চিকিৎসককে বিয়ে করেন পুলিশ কর্মকর্তা। বিয়ে করতে সাজিয়েছেন নকল বাবা-মা। জন্মনিবন্ধন জালিয়াতির মাধ্যমে নিজেকে সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের আপন ছোট ভাই পরিচয় দিতেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

সাবেক মন্ত্রীর ভাই পরিচয় দেওয়া ওই পুলিশ কর্মকর্তার জালিয়াতিতে বাদ যায়নি শিক্ষা সনদও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স ডিগ্রি রয়েছে তার। সাবেক মন্ত্রী ছাড়াও আরেক ভাই বিট্রিশ কাউন্সিলের উচ্চপদে কর্মরত এবং রাজধানীতে রয়েছে অঢেল সম্পত্তি।

এরকম নানা মিথ্যা তথ্য দিয়ে, নকল বাবা-মা সাজিয়ে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যান চিকিৎসক কনের বাড়িতে। প্রথমে কনের পরিবার রাজি না হলেও এক সময় রাজি হয়। পরে তাদের বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর চিকিৎসক স্ত্রীর কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন ২০ লাখ টাকা।

এদিকে, বিয়ের কিছুদিন পর ওই পুলিশ কর্মকতার আসল চেহারা প্রকাশ পায়। একাধিক স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসে। সব জানাজানি হলে ৫০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চিকিৎসক স্ত্রীকে নির্যাতন করেন তিনি। এরপরই আইনের আশ্রয় নেন ভুক্তভোগী নারী।

অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার নাম মানিকুল ইসলাম। তিনি রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার বাসিন্দা। সিলেটে কর্মরত থাকাবস্থায় মানিকুল ইসলাম ছিলেন উপপরিদর্শক (এসআই)। বর্তমানে পদোন্নতি পেয়ে হয়েছেন পরিদর্শক, দায়িত্ব পালন করেছেন একটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে। তবে বর্তমানে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশ কর্মকর্তা মানিকুল ইসলামকে আসামি করে গত ১ অক্টোবর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী। মামলা দায়েরের ২৫ দিন পেরিয়ে গেলেও ওই পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হননি।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘মানিকুলের অব্যাহত হুমকিতে পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় দিনযাপন করছি। সে বিভিন্ন সময় বলে যাচ্ছে আইন তার হাতের নাগালে। কি করে আমি সিলেটের গ্রামের বাড়িতে থাকি সে দেখে নেবে বলেও হুমকি দিচ্ছে।

এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা মানিকুল ইসলামের মোবাইল ফোন নম্বরে বারবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, সিলেট কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নজমুল হুদা বলেন, মামলার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। যেহেতু অভিযুক্ত একজন সরকারি কর্মকর্তা, সরকারের আইন অনুযায়ী মামলার তদন্ত চলছে। আসামি যে কর্মসংস্থানে আছেন, সেখানে আসামিকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানানো হয়েছে।

সিলেটের কোতোয়ালি থানার ওসি আলী মাহমুদ বলেন, ‘মানিকুল ইসলাম আগে এসআই ছিলেন। এখন তিনি ওসি। তিনি বরিশাল রেঞ্জে সংযুক্ত আছেন। চিকিৎসক স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে মামলা গ্রহণের পর আমরা তদন্তে আছি। বিষয়টি জানিয়ে আমরা বরিশাল রেঞ্জে চিঠি দিয়েছি। এখনো সেটির উত্তর আসেনি।