সাফের দলে কারা থাকছেন?

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ৩ নম্বর গেটে বসে টিকিট বিক্রি করছিলেন বাফুফের এক কর্মী। স্টেডিয়ামের ভেতরে তখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। টেলিভিশন সম্প্রচারের ক্যামেরা ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি বসাতে ব্যস্ত দেশের বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল নাইন। কাল বিকেলে এক ফাঁকে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে টুর্নামেন্টের প্রধান পৃষ্ঠপোষক সুজুকির বাংলাদেশের পরিবেশক উত্তরা মোটর্সের কার্যালয়ে হয়ে গেল সাফের ট্রফি উন্মোচন। রাত পোহালেই ঢাকায় শুরু হচ্ছে সাফ। এর আগে কাল সকালে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলকে প্রথম অনুশীলন করিয়েছেন কোচ জেমি ডে।

যে ২০ জন ফুটবলার নিয়ে জেমি ডে অনুশীলন করেছেন, সেই দলটা একরকম চূড়ান্ত। কিন্তু এখনো আনুষ্ঠানিক দল ঘোষণা করেননি কোচ। পরশু রাতে অবশ্য কোচ ফুটবলারদের ডেকে বলে দিয়েছেন কারা থাকছেন দলে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে দলে সামান্য বদল আনতে বাধ্য হয়েছেন কোচ। সাফের নিয়ম অনুসারে ২০ সদস্যের এই দলে গোলরক্ষক থাকতে হবে তিনজন। জেমি ডে রেখেছেন দুই গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা ও শহীদুল আলম সোহেলকে। আজ তাই আরেক গোলরক্ষককে দলে নিয়ে জমা দেবেন চূড়ান্ত তালিকা। সেই সৌভাগ্যবান গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। কপাল পুড়েছে তরুণ মিডফিল্ডার রবিউল হাসানের।

১২ সপ্তাহ পরখ করে যে সেরা ২০ জনকে বেছে নিয়েছেন কোচ, তাঁদের নিয়েই ঘণ্টাখানেক অনুশীলন করলেন। অনুশীলনের শেষ দিকে মাঠ ছোট করে দুই ভাগে ভাগ হয়ে অনুশীলন করেছেন জামাল-মামুনুলরা। এক দিকের গোলপোস্টের সামনে আশরাফুল, রক্ষণে তপু, বিশ্বনাথ, বাদশা ও ওয়ালী। মাঝমাঠে মাসুক মিয়া, বিপলু ও ফাহাদ, জামাল ভূঁইয়া। ফরোয়ার্ড লাইনে খেলালেন সুফিল ও সাদ উদ্দিনকে। তাঁরাই ঘুরেফিরে খেলেছেন এশিয়ান গেমসের একাদশে। এঁদেরই দেখার সম্ভাবনা রয়েছে সাফের একাদশে।

এশিয়ান গেমসের সাফল্য ও নীলফামারীর প্রস্তুতি ম্যাচ শেষে তারুণ্যেই বেশি আস্থা রেখেছেন কোচ। কাল অনুশীলন শেষে সেই ব্যাখ্যাটাও দিলেন, ‘পুরোনোদের চেয়ে নতুনরাই এগিয়ে রয়েছে। বয়সের কোনো ব্যাপার নেই, এখানে সেরা দলটাই খেলবে। এই মুহূর্তে আমরা কোথায় আছি, সেটা সবাই জানে। কে দলে এবং কে সেরা একাদশে সুযোগ পাচ্ছে, সেটাও সবাই জানে। আমরা বেশ কিছু তরুণ ফুটবলার পেয়েছি, যারা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ।’

সাম্প্রতিক সময়ে যুব দলে ঔজ্জ্বল্য ছড়ানো উইঙ্গার জাফর ইকবাল খেলতে পারছেন না ঘরের মাঠের সাফে। কোচের দাবি জাফরের চেয়েও ভালো খেলোয়াড় রয়েছেন দলে, ‘জাফর ইকবালের ভালো বিকল্প আমার হাতে আছে। ১২ সপ্তাহ অনুশীলন করিয়ে সেরাদেরই বেছে নিয়েছি আমি।’

এই দলে স্ট্রাইকারের বড্ড অভাব। এটা কোচের দৃষ্টিতেও একটি সমস্যা, তবে আশা করছেন গোলের সমস্যা টুর্নামেন্টে কাটিয়ে ওঠা যাবে, ‘আসলে দশ দিনের মধ্যে গোল স্কোরিং সমস্যাটা মেটার নয়। আমরা হঠাৎ করেই প্রতিটি সুযোগে গোল করতে পারব না। এই সমস্যা আমি আসার আগেও ছিল, লিগে বিদেশি স্ট্রাইকারদের খেলা বন্ধ না হলে এই সমস্যা যাবে না। আমাদের দলে রয়েছে একঝাঁক তরুণ যারা গোল দেওয়ার সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। আমি আশা করি, ওরা যখনই সুযোগটা পাবে তখনই সেটা ভালোমতো কাজে লাগাবে।’

কোচের সঙ্গে সুর মিলিয়ে কথা বলেছেন তরুণ মিডফিল্ডার আতিকুর রহমান ফাহাদ, ‘গোল করতে না পারার সমস্যাটা আমাদের আছে। সাফে আমরা এটা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করব। কারণ দেশের মাটিতে সবাই শতভাগ উজাড় করে খেলতে চাইবে।’