সাফজয়ী নারী ফুটবলার রাজিয়ার দাফন সম্পন্ন

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

সন্তান প্রসবের পর স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া জাতীয় নারী ফুটবল দলের সদস্য সাতক্ষীরার কৃতি সন্তান রাজিয়া সুলতানার (২০) দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ভোর ৪টার দিকে কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা ইউনিয়নের লক্ষীনাথপুর থেকে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। বাদ আসর বাড়ির পাশের মসজিদের সামনে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। রাজিয়া সুলতানা ওই গ্রামের মৃত নুর আলী সরদারের কন্যা।

রাজিয়ার ভাই মো. নজরুল ইসলাম সরদার বলেন, আমার বোন রাজিয়া সুলতানা পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে ছোট। স্থানীয় উপাকুড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা ফুটবল টিমে খেলার সুবাদে রাজিয়ার সুখ্যাতি বাড়ে। পরবর্তীতে সে কুশুলিয়া কলেজিয়েট স্কুল থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনার সময় ফুটবল চর্চা করতো। এরপর সে একে একে অনূর্দ্ধ-১৪, অনূর্দ্ধ-১৫, অনূর্দ্ধ-১৬, অনূর্দ্ধ-১৭ ও অনূর্দ্ধ-১৮ দলে সুনামের সঙ্গে খেলেছে। সর্বশেষ সে অনূর্দ্ধ-১৯ জাতীয় নারী ফুটবল দলের সদস্য হিসেবে বর্তমানে খেলাধুলা করেছে। দেশে ও দেশের বাহিরে ভারত, চায়না, ভুটান, নেপাল, মালদ্বীপ, সিঙ্গাপুর, পাকিস্তান, তাজাকিস্তান ও ইরানসহ বিভিন্ন দেশে ফুটবল খেলে খ্যাতি অর্জন করেছে। বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকেও সে অনেক পুরস্কার পেয়েছে। একপর্যায়ে ২০২০ সালে চট্টগ্রামের কাপ্তাই এলাকার পোশাক কারখানার কর্মকর্তা ইয়াম রহমানের সঙ্গে রাজিয়ার বিয়ে হয়।

 

তিনি আরও বলেন, বুধবার রাত ১০টার দিকে বাবার বাড়ি কালিগঞ্জের লক্ষীনাথপুরে স্বাভাবিকভাবে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেয়। পরবর্তীতে তার শরীর অসুস্থ হয়ে পড়লে বৃহস্পতিবার ভোর চারটার দিকে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পথেই মারা গেছে বলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক গোলাম মোস্তফা জানান। বৃহস্পতিবার বাদ আসর বাড়ির পাশের মসজিদের সামনে জানাজা নামাজ শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। বর্তমানে রাজিয়ার সদ্যোজাত পুত্র সন্তানটি সুস্থ আছে।

পরিবারের বরাত দিয়ে কালিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান সাইদ মেহেদি বলেন, ফুটবলার রাজিয়া সুলতানা অতি সাধারণ দরিদ্র পরিবারের মেয়ে। ২০ বছর বয়সী এই নারী ফুটবলারের অকাল মৃত্যুতে সাতক্ষীরার ক্রীড়াঙ্গনসহ জেলা ব্যাপী শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

 

সাইদ মেহেদি এসময় রাজিয়ার সদ্যোজাত একমাত্র সন্তান ও তার অসুস্থ মায়ের দায়িত্ব নেওয়াসহ তার নির্মাণাধীন অসমাপ্ত বাড়ি নির্মাণের জন্য সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।