সাকিব আল হাসান ‘সব্যাসাচি।’ একাই একশো। কেউ কেউ কেউ বলেন, ‘টু ইন ওয়ান।’ আবার কারো কারো মত সাকিব থ্রি ইন ওয়ান। যে কোন ফরম্যাটে বাংলাদেশের যে কোন ম্যাচে সাকিব থাকাই অনেক। তার না খেলার অর্থ ব্যাটিং শক্তি অনেক কমে যাওয়া। বোলিং একদমই কমজোরি হয়ে পড়া। বিশেষ করে প্রতিষ্ঠিত আর বড় শক্তিগুলোর বিপক্ষে ঘরের মাটিতে টেস্টে সাকিব না থাকার অর্থ- বোলিংটা একদমই দূর্বল হয়ে পড়া।
চট্টগ্রাম টেস্টে শনিবার শেষ ঘণ্টায় যখন বল টার্ন নিচ্ছিল, স্পিনারদের বল গ্রিপ করছিল, কিন্তু পাকিস্তানের উইকেট পড়ছিল না- তখন অনেক বাংলাদেশ ভক্ত ও সমর্থকই সাকিবকে খুব মিস করছিলেন। অনেকেই আফসোস করে বলেছেন, বল ঘুরতে শুরু করেছে। হয়ত তৃতীয় দিন (আজ রোববার) আরও ঘুরবে। ইস! এমন ম্যাচে যদি সাকিব থাকতেন! তাহলে নির্ঘাত পাকিস্তানিদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দিতেন।
তখন কী কেউ ভেবেছিলেন তাইজুলই সাকিবের অভাবটা পূরণ করে দেবেন! অবতীর্ণ হবেন সাকিবের ভূমিকায়! এবং দারুণ শক্ত ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসে আঘাত হেনে নিজ দলকে লিড উপহার দিতে পারবেন?
কিন্তু জায়গামত তাইজুল সেটাই করেছেন। আজ সকালে নিজের প্রথম ওভারে পরপর দুই বলে দুই উইকেটের পতন ঘটিয়ে দলকে ম্যাচে ফিরিয়েছেন বাঁ-হাতি তাইজুল। তার স্পিন ঘূর্ণিতে প্রথমে অপরাজিত থাকা ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক এবং পরের বলে আজহার আলির মত ঝানু টেস্ট ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফিরে গেলে পাকিস্তানিরা ব্যাকফুটে চলে যায়। শেষ পর্যন্ত বাবর আজমের দল আর সে ধাক্কা সামাল দিয়ে উঠতে পারেনি।
সাকিব ছাড়া নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্য কিভাবে সামলালেন তাইজুল? সাকিবের অনুপস্থিতি নিয়ে তার তেমন কোন কথা নেই। তার ভাষায়, ‘শুধু আজকেই না, আগেও সাকিব ভাইকে ছাড়া অনেকগুলো ম্যাচ খেলেছি।’
তবে স্বীকার করেছেন, ‘সাকিব ভাই থাকলে আমার ভূমিকা একরকম হয়, না থাকলে আরেকরকম হয়। এমন হওয়াটাই স্বাভাবিক। সাকিব ভাই বাংলাদেশ দলকে অনেক দিন ধরে সার্ভিস দিচ্ছেন। সফল একজন ক্রিকেটার।’
সাকিব না খেললে তার ওপর বাড়তি দায়িত্ব বর্তায়। তখন আসলে কী কী করতে হয়? এ প্রশ্নের জবাবে তাইজুল বলেন, ‘সাকিব ভাই না থাকলে তার ভূমিকা আমাকে পালন করতে হয়। রান আটকানোর একটা চাপ থাকে, উইকেট নেওয়ারও একটা চাপ থাকে। এই ভূমিকাগুলোই পালন করছি আরকি- উইকেটও নিতে হবে, রানও কম দিতে হবে।’