ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসকে নিয়ে মানহানিকর বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে দুটি মামলার আদেশ মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) দেবেন বলে জানিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১১ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরীর আদালতে মামলা দুটির আবেদন করা হয়। এক মামলার বাদী কাজী আনিসুর রহমান। অন্য মামলার বাদী অ্যাডভোকেট মো. সারোয়ার আলম। আদালত মামলা গ্রহণের বিষয়ে মঙ্গলবার আদেশ দেবেন বলে জানান।
এর আগে সোমবার সকালে ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে তিনি মানহানির মামলা করবেন।
গত শনিবার হাইকোর্ট এলাকার কদম ফোয়ারার সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে সাঈদ খোকন অভিযোগ করেন, ‘তাপস দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শত শত কোটি টাকা তার নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তর করেছেন। এই টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা তিনি লাভ করেছেন এবং করছেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মেয়র তাপস সিটি করপোরেশন আইন ২০০৯, দ্বিতীয় ভাগের দ্বিতীয় অধ্যায়ের অনুচ্ছেদ ৯ (২) (জ) অনুযায়ী মেয়র পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।’
সাঈদ খোকন আরও বলেন, ‘তাপস মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে গলাবাজি করে চলছেন। আমি তাকে বলব, রাঘববোয়ালের মুখে চুনোপুঁটির গল্প মানায় না। দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে হলে সর্বপ্রথম নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত করুন। তারপর চুনোপুঁটির দিকে দৃষ্টি দিন।’
বাদী অ্যাডভোকেট মো. সারোয়ার আলম মামলার অভিযোগে উল্লেখ করেন, আসামি সাঈদ খোকন গত শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টার মধ্যে জাতীয় ঈদগাহ গেটের সামনে ফুলবাড়িয়া মার্কেটের উচ্ছেদ হওয়া ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে তার বক্তব্যে বলেন, ‘তাপস ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে গলাবাজি করে চলেছেন, আমি তাকে বলব রাঘবোয়ালের মুখে চুনোপুঁটির গল্প মানায় না। কেননা দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে হলে সর্বপ্রথম তার নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হবে। তারপর চুনোপুঁটিদের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। অথচ তিনি উল্টো কাজ করছেন। তিনি বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর তাপস ডিএসসিসির শত শত কোটি টাকা তার নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তর করেছেন।’
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ‘গত রোববার আসামি সাঈদ খোকনের এই বক্তব্য নিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় পত্রিকা এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে ব্যারিস্টার শেখ ফলে নূর তাপসের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য প্রকাশ করে আসামি সাঈদ খোকন দণ্ডবিধি আইনের ৫০০ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।’
অভিযোগে বাদী আরও বলেন, ‘মামলার বাদী গত রোববার বিকেল ৫টায় শাহবাগ থানায় হাজির হয়ে এজাহার দায়ের করতে চাইলে থানা কর্তৃপক্ষ এজাহার না দিয়ে আদালতে পিটিশন মামলার পরামর্শ দেন। এমতাবস্থায় ন্যায়বিচারের স্বার্থে আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৫০০ ধারায় অপরাধ আমলে গ্রহণ করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে জেলহাজতে আটক রাখার জন্য আবেদন করছি।’