সাংবাদিক রফিকের বিরুদ্ধে ৬ মাসে ৯ মামলা, ৬ মামলায় খালাস!

:
: ৩ years ago

নাহিদুর রহমান : ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের বরাদ্দকৃত খাদ্য বিতরণে অনিয়ম, দুর্নীতির মাধ্যমে ঠিকাদার হাশেম আলী আয় করেছেন কোটি কোটি টাকা। গড়েছেন অগাধ বিত্ত বৈভব । এসংক্রান্ত বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ধারাবাহিকভাবে সংবাদপত্রে প্রকাশ করেন, দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিনের তৎকালীন সম্পাদক বর্তমানে আমাদের কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি খায়রুল আলম রফিক । ঠিকাদার হাশেম আলী দুর্নীতি অনিয়মের সংবাদ প্রকাশ করাটাই কাল হয়ে উঠে সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের। হাশেম আলী তার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে খায়রুল আলম রফিকের বিরুদ্ধে দায়ের করে একের পর মিথ্যো মামলা। মামলা ও গ্রেফতারের ভয়ে পালিয়ে থাকতে হয়েছে তাকে । বন্ধ হয়ে যায় আয় রোজগার হওয়ার পথে।

দুর্নীতিবাজ ঠিকাদারের রোষানলে পড়ে সাংবাদিকের পরিবার মানবেতর জীবন-যাপন করেন । সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খায়রুল আলম রফিকের নামে দায়েরকৃত ৬টি মামলার মধ্যে বিজ্ঞ জুডি: ম্যাজি: শেরপুর আদালত মামলা নং- ১১৬/১৬, বাদী : কামরুজ্জামান লেবু নামের এক আ,লীগের নেতা , বিজ্ঞ জুডি: ম্যাজি: আদালত ময়মনসিংহ, মামলা নং- ১১৭/১৭, বাদী: ত্রিশাল নজরুল কলেজের অধ্যাপক মজিবুর রহমান, বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ ৩ যুগ্ম আদালত মামলা নং- ৬৮২/১৯ বাদী, সাংবাদিক কামাল হোসেন। , বিজ্ঞ সাইবার ট্রাইব্যুনাল ময়মনসিংহ আদালত মামলা নং- ৭৭/২১, বাদী: ড. মোঃ ইদ্রিস খান, বিজ্ঞ জুডি: ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গাজীপুর মামলা নং- ৫৭৮/১৯ এবং বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জামালপুর মামলা নং- ১২৩/১৯ ।

এছাড়া ঠিকাদার হাশেম আলী নিজেও বাদী হয়ে সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের নামে একটি সাজানো মামলা করেছেন। এসব মামলায় দীর্ঘসময় জেলও খেটেছেন সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক। পরে প্রমাণ হয়েছে, সবই সাজানো মামলা। আদালতের মাধ্যমে মিলেছে নিস্কৃতি । কিন্তু এরই মধ্যে যা হওয়ার হয়ে গেছে। একে একে এসব সাজানো মামলায় হাজিরা দিতে দিতে কিংবা জেলের ঘানি টানতে টানতে আজ নিঃস্ব তিনি। সাংবাদিকতার পাশাপাশি বাবার রেখে যাওয়া সম্পত্তি দেখাশোনা করতেন, তাও আজ নেই।

অনুসন্ধানে জানা গেছে , খায়রুল আলম রফিকের নামে এমনও মামলা হয়েছে, যে মামলার বাদীর বাড়িঘর কিংবা নিজের কোনো অস্তিত্বই পাওয়া যায়নি। আবার মামলার বর্ণনার ঘটনাও ঘটেনি ।

সূত্র জানায়, বিজ্ঞ জুডি: ম্যাজি: শেরপুর আদালত মামলায় ২০২০ সালে খালাস পান খায়রুল আলম রফিক । একই ভাবে বিজ্ঞ জুডি: ম্যাজি: আদালত ময়মনসিংহ, মামলা থেকে ২০২০ সালে, বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ ৩ যুগ্ম আদালতের মামলায়, ২৪/১১/২০২১ , বিজ্ঞ সাইবার ট্রাইব্যুনাল ময়মনসিংহ আদালত মামলায় ২২/১১/২০২১ সালে, বিজ্ঞ জুডি: ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গাজীপুর মামলা ২০২১ সালে এবং বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জামালপুর মামলায় ২০২১ সালে খালাস পান । ষড়যন্ত্রমূলক জামালপুর ও গাজীপুরের দুটি মামলার বাদী সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিককে চিনেনই না।

বাদীরা জানিয়েছেন, খায়রুল আলম রফিককে চেনেন না তারা। অপরদিকে নাম ঠিকানা ভূয়া হওয়ায় গাজীপুরের মামলার বাদীকেই কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক । পরে ১ মাস কারাভোগের পর বাদীকে জামিনে নেয় তার পরিবার । খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খায়রুল আলম রফিকের বিরুদ্ধে এইসব মামলার পেছনে আছে মচিমহার বিএনপিপন্থী ঠিকাদার হাশেম আলী কোটি কোটি টাকার সম্পদ ।

সাংবাদিক রফিক ঠিকাদার হাশেমের দুর্নীতি অনিয়ম এবং অগাধ সম্পদের তথ্য সংবাদপত্রের মাধ্যমে জনসন্মুখে প্রকাশ করায় নিজেকে আড়াল করতেই হাশেম আলী তার অনুগতদের দিয়ে এসব মামলা দায়ের করেছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, খায়রুল আলম রফিকের সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় প্রশাসনের টনক নড়ে । এরপর একের পর মামলা ও এভাবেই গ্রেপ্তার হওয়ার পর আর রক্ষা মেলা দায় হয়ে যায় সাংবাদিক রফিকের । জামিন নিয়ে বের হওয়ার পরপরই পড়ে আরেকটি মামলার কোপ। বাড়তে থাকে মামলার সংখ্যা। মামলা টানতে টানতে দিন, সপ্তাহ, মাসও বছর পেরোয়। এড. আবু সাদাত মোহাম্মদ খায়ের জানান, সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের বিরুদ্ধে জামালপুর,শেরপুর ও গাজীপুরে মিথ্যা অভিযোগকারীদের যথাযথভাবে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন ।

মিথ্যা মামলার চাপে মাথায় দুশ্চিন্তা নিয়ে জীবনের রোজকার দিনগুলি পার করতে হয়েছে তাকে। নিরপরাধ সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের বন্দীত্ব, অর্থনৈতিক ক্ষতি, মানসিক দুশ্চিন্তা এবং তার পরিবারের সদস্যদের অসহায়ত্ব- সব কিছু বিবেচনায় আনতে হবে। মিথ্যা মামলায় নির্দোষ খায়রুল আলম রফিক ও তার পরিবারের যে পরিমাণ মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, শুধু অর্থনৈতিক জরিমানা কিংবা নামমাত্র সাজা, সেই ক্ষতকে কখনই পূরণ করতে সক্ষম হয় না। আইন সহায়তা কেন্দ্র ফাউন্ডেশনের (আসক) নির্বাহী পরিচালক খন্দকার সাইফুল ইসলাম সজল বলেন, মিথ্যা মামলায় একজন পেশাদার সাংবাদিক হয়রানির শিকার হয়েছেন । এর দায় আমরা এড়াতে পারি না ।